ছবিটি প্রতীকী
সম্যক খান, মেদিনীপুর: চিকিৎসকদের লাগাতার আন্দোলনের মাঝে ফের প্রাণ হারাল এক সদ্যোজাত৷ সাগর দত্ত হাসপাতালের পর এবার ঘটনাস্থল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল৷ মৃত সন্তানকে কোলে নিয়ে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখান সদ্যোজাতর পরিজনেরা৷ যদিও কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশি আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷ অপরদিকে, এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদে এই হাসপাতালের ১০জন চিকিৎসক শনিবার ইস্তফা দেন৷
গত মঙ্গলবার মেদিনীপুরের আকর্ষানগরের বাসিন্দা এক তরুণীর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়৷ তড়িঘড়ি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে৷ একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন গৃহবধূ৷ জন্ম থেকেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা ছিল তার৷ তাই সদ্যোজাত এসএনসিইউ ওয়ার্ডেই ছিল৷ পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকদের লাগাতার কর্মবিরতির জেরে সদ্যোজাত ঠিকঠাক পরিষেবা পায়নি৷ শনিবার সকালে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, মাত্র তিন দিনের শিশুটি মারা গিয়েছে৷
এই খবর শোনার পরই উত্তেজিত হয়ে পড়েন শিশুর পরিবারের লোকজনেরা৷ চিকিৎসকদের আন্দোলনের মাঝেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শিশুর মা৷ অন্যান্য রোগীর পরিজনেরাও প্রতিবাদে শামিল হন৷ আন্দোলনকারী চিকিৎসক এবং সদ্যোজাতের পরিজনদের সঙ্গে বচসাও হয়৷ খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী৷ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারও ঘটনাস্থলে যান৷ শিশুমৃত্যুর যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷
এর আগে গত মঙ্গলবার সাগর দত্ত হাসপাতালেও মৃত্যু হয় একটি পুত্রসন্তানের৷ পরিবার সূত্রে খবর, জন্ম থেকে সদ্যোজাত শ্বাসকষ্টে ভোগার পর বুধবার তার অবস্থার অবনতি হয়। শিশুকে ভেন্টিলেশনে রাখার কথা বললেও ওই হাসপাতালের পরিকাঠামো নেই বলেই জানায় কর্তৃপক্ষ৷ তাই বাধ্য হয়ে ছেলেকে বাঁচাতে শহরের একের পর এক এক হাসপাতালে নিয়ে যান শিশুর বাবা৷ কিন্তু বি সি রায় শিশু হাসপাতাল থেকে শুরু করে এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর কোথাও তাঁর সন্তানের ঠাঁই হয়নি। কর্মবিরতির অজুহাত দেখিয়ে সব জায়গা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় শিশুটিকে। শেষমেশ শিশুটিকে সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও, সেখানে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেশন না থাকায় তাকে বাঁচানো যায়নি৷ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মেদিনীপুর মেডিক্যালে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় রোগীর পরিজনদের ক্ষোভের পারদ আরও চড়ছে৷ চিকিৎসকদের ভূমিকা এবার জনজীবনে বড়সড় নেতিবাচক ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.