রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: নিম্নচাপের ধাক্কায় রাতভর বৃষ্টি। তার সঙ্গে উত্তাল সমুদ্র। যার জেরে জলোচ্ছ্বাস রামনগর এক ব্লকে। উপকূলীয় কয়েকটি গ্রামে জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি শংকরপর থেকে তাজপুর পর্যন্ত তৈরি হওয়া মেরিন ড্রাইভ তথা সমুদ্রবাঁধ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লম্বা ছুটি পেয়ে যারা দিঘায় গিয়ে তাদের আনন্দ একেবারে মাটি।
[নরবলি ‘গুজবে’ উত্তপ্ত কালনা, আক্রান্ত পুলিশ]
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শঙ্করপুর এবং তাজপুরের বাঁধ উপচে সমুদ্রের জল গ্রামের মধ্যে ঢুকতে শুরু করে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা।পুকুরের মাছ থেকে কৃষি সমস্তক্ষেত্রে ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। টানা বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কয়েকটি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়। তৈরি রাখা হয়েছে আয়লা সেন্টারগুলি। মজুত করা হয়েছে ত্রাণসামগ্রী। রামনগর এক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নিতাই সার বলেন, সমুদ্রপাড় বাঁধাইয়ের কাজ গুরুত্ব সহকারে করছে রাজ্য সরকার। নতুন করে শংকরপুর লাগোয়া এলাকায় যাতে সমুদ্রের জল না ঢোকে তার জন্যে বালির বস্তা ফেলে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। টানা তিন দিনের বৃষ্টির জেরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নদীগুলিতে জলের পরিমাণও বাড়তে শুরু করেছে। যেকোনও সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। আগাম দুর্ঘটনার আঁচ করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ফেরি সার্ভিসগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। হলদিয়া পুরসভাতেও খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে মৎস্যজীবীদের রবিবার পর্যন্ত সমুদ্রে না নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু ট্রলার দিঘা মোহনা ও পেটুয়াঘাট মৎস্য বন্দরে ফিরে এসেছে।
[কলকাতাকে টেক্কা, কালীপুজোয় রাজ্যে প্রথম কোনও কার্নিভাল সুতাহাটায়]
কালীপুজোর রাত থেকে দিঘায় শুরু হয়েছে প্রবল জলোচ্ছ্বাস। ওল্ড দিঘার হোটেলের বারান্দায় বসে বেশ কিছু পর্যটক জলোচ্ছ্বাস উপভোগ করেছেন। তবে বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ পর্যটকই একপ্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। দীপাবলি ও ভাঁইফোটার সঙ্গে যোগ হয়েছে শনিবার ও রবিবারের সপ্তাহান্তের ছুটি। টানা ছুটিতে ভ্রমণপিপাসু বাঙালি বেড়ানোর জন্য খুঁজে নিয়েছিলেন সৈকতনগরীকে। কিন্তু গত বুধবার থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় অনেকেরই মেজাজ বিগড়েছে। সন্ধ্যের পরে সমুদ্রপাড়ে বসে সমুদ্রের নোনা হাওয়ার সঙ্গে মুচমুচে মাছের ভাজা খাওয়ার মজা উপভোগ করার মজাটাই এবার আক্ষরিক অর্থে জলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.