Advertisement
Advertisement
Purulia

‘সিংহ’ ছেড়ে ‘হাত’, দেওয়ালে আঙুল ফুটিয়ে তুলতে পুরুলিয়ায় কমরেডদের ভরসা ছাঁচ

'কাস্তে-হাতুড়ি' আঁকা মন কিছুতেই 'হাত' আঁকার কাজে হৃদয় বসাতে পারছেন না।

Due to alliance CPIM leaders drawing Hand symbols in Purulia for 2024 Lok Sabha election
Published by: Amit Kumar Das
  • Posted:April 11, 2024 11:18 pm
  • Updated:April 11, 2024 11:18 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও।’ কিংবা ‘এই হাত শোষকের হাত, এই হাত রক্ত মাখা হাত।’ যাঁরা মিটিং- মিছিলে এই স্লোগান তুলতেন সেই কমরেডরাই এখন জনগণের ভোট চাইতে দেওয়ালে ‘হাত’ আঁকছেন। তবে কাস্তে-হাঁতুড়ি আঁকা কমরেডের হাতে দেওয়ালে ‘হাত’ ফুটিয়ে তোলা সহজ হচ্ছে না। তাই পুরুলিয়ায় ছাঁচ ব্যবহার করছেন সিপিএমের (CPIM) কমরেডরা। না হলে যে দেওয়ালে যথাযথভাবে ফুটে উঠছে না হাতের রেখা। অনভ্যস্ত হাতে আঙুলের চেহারাও সঠিকভাবে ফুটিয়ে তোলা যাচ্ছে না। তবুও দেওয়ালের পর দেওয়াল হাত যে আঁকতেই হবে। সব সময় ছাঁচ না মেলায় হাতের গড়ন ঠিক হচ্ছে না। সব মিলিয়ে বেশ সমস্যায় পুরুলিয়ায় (Purulia) গ্রাম থেকে শহরের কমরেডরা।

কিন্তু জোট যে ২০১৬ ও ২১-র বিধানসভায় হয়েছিলো। তাহলে? আট বছরেও হাতের গড়ন দেওয়ালে তুলে ধরতে পারছেন না কেন? যেখানে লোকসভায় শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের কঠিন প্রতীক সিংহ চিহ্ন দেওয়ালে আঁকতেন সিপিএম কর্মীরা। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অসীম সিনহা বলেন, “এই নিয়ে তিন-তিন বার সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট বা আসন সমঝোতা হলেও নিচু তলার কর্মীরা তা মেনে নিতে পারেননি। তাই কাস্তে-হাতুড়ি আঁকা মন কিছুতেই হাত আঁকার কাজে হৃদয় থেকে মন বসাতে পারছেন না। কিন্তু সিপিএমের নেতৃত্বদের যে এখন নতুন প্রেম কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে। এবারও এই সমঝোতা কোনো কাজে আসবে না।” কিন্তু পার্টির সদস্য পুরুলিয়া দু’নম্বর ব্লকের কড়চা গ্রামের বাসিন্দা কাজল চক্রবর্তী বলেন, “হাত আমাদের আঁকতে অসুবিধা হচ্ছে এটা ঠিকই কিন্তু পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অতীতের সেসব কথা আমাদের আর মনে নেই। তাই আমরা ছাঁচ ব্যবহার করে হাতের চিহ্ন আঁকছি। আমাদের এখন একটাই লক্ষ্য, ইন্ডিয়া জোটের কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাতোর পক্ষে ভোট করানো।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে বেশ করেছি’, তৃণমূলের বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁসের অভিযোগ রেখার]

সিপিএমের আরও দুই কর্মী ভাঙড়ার দোলগোবিন্দ মাহাতো, কড়চার নিবারণ দশমডি বলেন, “আগামী রবিবার থেকে আমরা হাত আঁকা শুরু করেছি। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০-২৫ টি দেওয়ালে কাজ করতে পেরেছি। আরও শ’খানেক বাকি। তবে চুন দেওয়ার কাজ হয়ে গিয়েছে। ছাঁচের পাশাপাশি কোন অসুবিধা হলে এলাকার কংগ্রেস কর্মীকেও ডেকে নিচ্ছি।” সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, “বিজেপি, তৃণমূলের হাত থেকে দেশ আর বাংলাকে বাঁচাতে ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে। বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে আমাদের সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা।”

[আরও পড়ুন: এবার চাকরি গেল কেজরির ব্যক্তিগত সচিবের, উপরাজ্যপাল সাক্সেনার হাত দেখছে আপ!]

পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা এই কেন্দ্রের প্রার্থী নেপাল মাহাতো বলেন, “হাত আঁকা খুব একটা কঠিন নয়। দেওয়াল লিখন থেকে প্রচার সবকিছুই আমাদের যৌথভাবে চলছে। কোথাও কোনো সমস্যা হবে না।” একেবারে প্রথমে কংগ্রেসের প্রতীক ছিল জোড়া বলদ এবং জোয়াল। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত তখন পরিচিত স্লোগান ছিল “ভোট দেবেন কোনখানে? জোড়া বলদের মাঝখানে।” পরে কংগ্রেস ভাঙলে ইন্দিরা কংগ্রেসের প্রতীক হয় ‘গাই-বাছুর’। ওই চিহ্নকে নিয়ে তৎকালীন রাজনৈতিক মেলবন্ধনকে মাথায় রেখে রসিক বাঙালি ছড়া লিখেছিল, “দিল্লি থেকে এলো গাই/ সঙ্গে বাছুর সিপিআই।” ১৯৭৭ সালের পর থেকে জাতীয় কংগ্রেসের স্থায়ী প্রতীক হয় হাত। তবে ১৯৫১ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচনে হাত প্রতীক চিহ্ন ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের। ৭৭-এ সেই হাত প্রতীক হয়ে যায় কংগ্রেসের। তবে হাতের আঙুলের গঠন দুটি প্রতীকের ক্ষেত্রে ছিল সামান্য আলাদা।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement