ধীমান রায়, কাটোয়া: স্মার্টফোনে আসক্ত বর্তমান প্রজন্ম। এখনকার পড়ুয়ারা বইয়ের থেকে ফোনে নজর রাখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকে। তাই পাঠাগারগুলিতে পাঠকদের দেখা মেলে না। ছাত্রছাত্রীদের বইমুখী করতে এবার অভিনব উদ্যোগ মঙ্গলকোটে। পাঠাগার খুলে অপেক্ষা না করে এবার লাইব্রেরিই পৌঁছে দেওয়া হবে পড়ুয়াদের সামনে। মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম সাধারণ পাঠাগার এবার ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার নিয়ে ঘুরবে এলাকার স্কুলে স্কুলে। এই উদ্যোগের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে ‘দুয়ারে গ্রন্থাগার।’
স্মার্টফোনের যুগে বই পড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ যে কমে এসেছে এটা বলাই বাহুল্য। বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্মের বড় অংশের পড়ুয়াদের মধ্যে আর বই পড়ার আগ্রহ দেখা যায় না। পড়ুয়াদের অনেককেই দেখা যায়, কোনও বিষয়ে কোনও প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে বই ঘেঁটে দেখার পরিবর্তে গুগুল সার্চ অথবা ইউটিউব ফলো করতে। শিক্ষাবিদরা পড়ুয়াদের জন্য এই প্রবণতা ভীষণ ক্ষতিকারক বলেই মনে করেন। কিন্তু যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে স্মার্টফোনের প্রতি ঝোঁক ও ‘ভরসা’ যেখানে বেড়েই চলেছে সেখানে তাদের মূল স্রোতে ফেরানো অর্থাৎ পাঠাগারমুখী করা কি আদৌ সম্ভব? মাজিগ্রাম সাধারণ পাঠাগারের সম্পাদক বিকাশ নারায়ণ চৌধুরীর কথায়, “আগে তো সবজি, মাছ থেকে টুকিটাকি জিনিসপত্র কিনতে আমাদের অনেকটা দুরে বাজারে যেত হত। এখন তো গ্রামীণ এলাকাতেও সাইকেল ভ্যান বা অন্য যানবাহনে করে সেইসব জিনিস আমাদের বাড়ির সামনে চলে আসছে। ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে জিনিসপত্র কিনতে সুযোগ পাচ্ছি। তাহলে পাঠাগারকেও এবার পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সময় এসেছে। আশা করছি এতে ভালো ফল পাওয়া যাবে।”
মাজিগ্রামের পাঠাগারের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার মঙ্গলকোটের বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে বইয়ের ভাণ্ডার নিয়ে পৌঁছে যাবে। মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সূচনার পর চাকুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, কোঁয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে দুয়ারে গ্রন্থাগার কর্মসূচি চলবে। বইয়ের গাড়ির কাছে বসেই পড়ার সুযোগ পাবে ছাত্রছাত্রীরা। মাজিগ্রাম বিশ্বেশ্বরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত সাহা বলেন, “এই ধরনের উদ্যোগ ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভীষণ ভালো উদ্যোগ। আমরাও পড়ুয়াদের সবসমই উৎসাহিত করি যাতে তারা বেশি করে বইমুখী হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.