ছবি: প্রতীকী।
দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: নেশামুক্তি কেন্দ্র নয়, হাসপাতালে ভরতি রেখেই চিকিৎসা করতে হবে৷ আজব দাবি সুস্থ সবল এক মদ্যপের৷ দাবিপূরণ না হওয়ায় চিকিৎসকের দিকে ছুরি হাতে তেড়ে এল সে৷ এই ঘটনা ঘিরে শোরগোল হুগলির চন্দননগরের ইএসআই হাসপাতালে৷ আজব কাণ্ড ঘটিয়ে আপাতত শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছে ওই মদ্যপ মহম্মদ ফরিদের৷
ভদ্রেশ্বরের একটি জুট মিলে শ্রমিক হিসাবে কাজ করে মহম্মদ ফরিদ৷ প্রতিদিনই আকন্ঠ মদ্যপান করে সে৷ বুধবারও তার অন্যথা হয়নি৷ রীতিমতো মাতাল অবস্থায় এদিন গৌরহাটি ইএসআই হাসপাতালে হাজির হয়। অত্যন্ত অসুস্থ বলে নার্স ও চিকিৎসকদের জানায়৷ সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু হয়৷ তবে অসুস্থতার কোনও লক্ষ্মণই খুঁজে পাননি চিকিৎসকরা৷ আর সে কথা শুনেই মেজাজ আগুন হয়ে যায় ফরিদের৷ তার দাবি, চিকিৎসক নাকি কিছুই বুঝতে পারেননি৷ গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় চিকিৎসকের উচিত হাসপাতালে ভরতি রেখে তার চিকিৎসা শুরু হোক৷ একজন সুস্থ মানুষকে কীভাবে হাসপাতালে ভরতি নেওয়া সম্ভব, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারেননি চিকিৎসক৷ বাদানুবাদ চলতে চলতেই মেজাজ সপ্তমে চড়ে যায় ফরিদের৷ কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে ছুরি হাতে চিকিৎসকের দিকে তেড়ে আসে সে৷ যদিও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরা তাকে ধরে ফেলে৷ বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চন্দননগর থানায় খবর দেয়৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ৷ ফরিদকে পুলিশের হাতে তুলে দেন হাসপাতাল কর্মীরা৷
এলাকার বেশিরভাগ কারখানার শ্রমিকরাই এই ইএসআই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন৷ প্রায়শই তাই মদ্যপের কাণ্ডকারখানার সাক্ষী থাকেন বলেই জানান হাসপাতাল কর্মী ও চিকিৎসকরা৷ এই ঘটনার অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘মাতলামি আগেও সহ্য করেছি৷ তবে আগে কখনও কেউ এভাবে ছুরি নিয়ে তাড়া করেনি৷’’ শ্রমিকরাই এই ইএসআই হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করছেন বলেই আক্ষেপের সুর সুপার অভ্রজিৎ মুখোপাধ্যায়ের গলায়৷ এই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তার বিষয়ে যথেষ্টই চিন্তিত হাসপাতাল কর্মী এবং চিকিৎসকরা৷ হাসপাতালে আর অশান্তি যাতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেই জানান পুলিশ আধিকারিকরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.