সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: পারিবারিক অশান্তির জেরে মদ্যপান করে দেড়শো ফুট উঁচু মোবাইল টাওয়ারে উঠে পড়লেন এক ব্যক্তি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের দৌলতাবাদ গোবরার মোড়ে। দমকল কর্মীরা প্রায় দু’ঘ্ণ্টার চেষ্টায় ব্যক্তিকে টাওয়ার থেকে নামিয়ে আনেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীরা।
ঘটনা রবিবার বিকেবেলার। বাড়িতে ঝগড়াঝাঁটির পর মদ্যপান করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন ৪৩ বছরের অমল সরদার। সামনে দেড়শো ফুট উঁচু একটি বেসরকারি মোবাইল টাওয়ারের একেবারে উপরে চড়ে বসেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টাওয়ারের চূড়ায় উঠে পড়ে তিনি শুধু ‘মা-মা’ বলে চিৎকার করছিলেন। বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত প্রায় ঘন্টা দুই ধরে এই ঘটনায় উত্তেজনা জারি ছিল গোবরার মোড় এলাকায়। কীভাবে তাঁকে উদ্ধার করা হবে, তা নিয়েই ভাবতে থাকেন সকলে।
উপায়ান্তর না দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষ্ণুপুর থানার পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দমকলকে বিষয়টি জানায়। দমকলের একটি ইঞ্জিন সেখানে পৌঁছায়। এরপর পুলিশ, দমকল এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ব্যক্তিকে টাওয়ার থেকে নিচে নামিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু মদ্যপ ব্যক্তি কোনও অবস্থাতেই নিচে নামতে চাইছিলেন না। তাঁর এই জেদে উদ্বেগ আরও বাড়তে থাকে। শেষমেশ ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় দমকল কর্মীরা সন্ধে নাগাদ ওই ব্যক্তির কোমরে দড়ি বেঁধে নিচে নামিয়ে আনেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সাধারণ মানুষ।
মদ্যপ ওই যুবকের বাবা গৌর সরদার জানিয়েছেন, প্রতিদিন ছেলের মদ খেয়ে বাড়ি ফেরা নিয়ে তাঁদের পরিবারে বেশ কিছুদিন ধরেই অশান্তি চলছিল। অমলের স্ত্রী তাঁর সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার পর থেকে সে মদ খাওয়ার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এদিনের ঘটনা তারই জের বলে মনে করছেন তিনি। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা সুফল ঘাঁটু অভিযোগ করেন, বেসরকারি মোবাইল সংস্থার ওই টাওয়ারটি একটি খোলা জায়গায় রয়েছে। এর আগেও দু’বার দুই যুবক টাওয়ারের চূড়ায় উঠে গিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সংস্থা কর্তাদের সে কথা জানিয়ে টাওয়ারটি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়। কিন্তু ওই সংস্থা সে কথা কানে তোলেনি। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময় বড়সড় কোনও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ওই টাওয়ারটি।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.