Advertisement
Advertisement

Breaking News

মেটেলি কালীবাড়ি

দেড়শো বছরের রীতিতে ছেদ, পশুবলি বন্ধ হল মেটেলি কালীবাড়ির পুজোয়

প্রাচীন এই মন্দিরে হেরিটেজ তকমা পাওয়ার জন্য মরিয়া মেটেলি কালীবাড়ি পুজো কমিটি।

Dooars Matelli Kalibari Kali Pujo stops animal sacrifices
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:October 26, 2019 8:04 pm
  • Updated:October 26, 2019 8:04 pm  

অরূপ বসাক, মালবাজার: মেটেলি ডুয়ার্সের এক অন্যতম পুরনো জনপদ। একসময় মেটেলির মধ্য দিয়ে ভুটানের সঙ্গে সমতল এলাকার বানিজ্যিক যোগাযোগ চলত। এখানে ভুটানি লামাদের দু’টি বৌদ্ধ গুম্ফা ছিল। জলা জঙ্গলে ভরা বিষাক্ত সাপদের এলাকায় বৌদ্ধ গুম্ফার পাশাপাশি শাক্তদের এক কালীমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে ঠিক কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই তথ্য কোথাও লিপিবদ্ধ নেই। তবে মন্দির চত্বর থেকে পাওয়া কিছু নিদর্শন দেখে আন্দাজ করা যায়, এই মন্দির প্রায় দেড়শো বছর কিংবা তারও পুরনো। আজও মহাসমারোহে বৈদিক রীতি মেনে পুজো হয় মেটেলি কালীবাড়িতে। জাগ্রত বলেই দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আজও আসেন পুজো দিতে। তবে মানবিক কারণে এবছর থেকে বন্ধ হল পশুবলি। যেই উদ্যোগে খুশি পশুপ্রেমীরা।

স্থানীয় প্রবীণদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, ১৯৬৮ সালের প্রবল ঝড়ে প্রকাণ্ড এক গাছ ভেঙে পড়ে সাবেক এই মন্দিরের উপর। ভেঙে পড়ে মন্দিরের গম্বুজ তথা কিছু অংশ। তারপর স্বাভাবিকভাবেই মন্দিরের নবনির্মানের প্রয়োজন হয়। ঠিক সেই সময়েই মাটি খুড়তে গিয়ে মাটির নিচ থেকে বেরিয়ে আসে বেশ কিছু নিদর্শন ও একটি অতি প্রাচীন বেদী। সেই বেদীর গায়ে উল্লেখিত ছিল- ১২৭৮ বঙ্গাব্দ। সেই হিসাব ধরলে বর্তমান বছর মেটেলি কালীবাড়ির পুজো পা দিল ১৪৮ বর্ষে। তবে, অনেকের মতে এই মন্দির তার চেয়েও আরও পুরনো। তাদের যুক্তি, একসময়ে এই এলাকা ভূটানের অধীনে ছিল। সেই সময় কোনও শাক্ত সম্প্রদায়ের মানুষ এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তারপর চা শিল্পের প্রয়োজনে ইংরেজরা এই এলাকা নিজেদের অধিকারে নিয়ে নেয়। গড়ে ওঠে চা বাগান ও জনপদ। সেই থেকেই নিয়মিত পুজা হয়ে আসছে। তবে, বৌদ্ধ গুম্ফা দু’টির অস্তিত্ব বর্তমানে না থাকলেও কালি মন্দির তার স্বমহিমায় বিরাজমান। প্রায় দেড়শো বছরের এই মন্দিরকে হেরিটেজ তকমা দেওয়ার জন্য মরিয়া মন্দিরের পুজো কমিটি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: খাদান কালীর আরাধনায় অংশ নেন মুসলিমরাও, প্রাচীন পুজোর মাহাত্ম্য আপনাকে অবাক করবে]

মেটেলি কালীবাড়ি নিয়ে নানান অলৌকিক কাহিনিও শোনা যায় লোকমুখে। প্রাচীনত্বের জন্য এই মন্দিরের খ্যাতি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। অনেকে এখানকার দেবীকে জাগ্রত বলে জানেন। সেজন্য দ্বীপান্বিতা কালীপুজোর রাতে দর্শকের ঢল নামে মন্দির চত্বরে। এবছরও তার অন্যথা হবে না বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। উদ্যোক্তারা আরও জানান, এবার প্রথম পুজোয় পশুবলি থাকছে না। উঠে যাচ্ছে পশুবলি প্রথা। কোনও এক সময় ১০১টি পশুবলি হত কালীপুজোর দিন। সেই প্রবনতা কমছে ক্রমশ। চলতি বছরে মানবিক কারণে উদ্যোক্তারা পশুবলি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ফল, চালকুমড়ো বলি হবে। আগামী রবিবার রাতে যখন অমানিশির অন্ধকারে ঢাকবে চারদিক দীপাবলির আলোয় ঝলমল করে উঠবে মেটেলি কালীবাড়ি।

[আরও পড়ুন: কালীপুজোর জায়গা দখল নিয়ে দুই ক্লাবের সদস্যদের লড়াই, জখম বহু]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement