শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: ইটাহারের অমল আচার্যকে তৃণমূলে না ফেরানোর আরজি জানিয়ে দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতির নেতৃত্বে তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়করা কলকাতায় দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দ্বারস্থ হয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দলীয় প্যাডে লেখা আবেদনপত্রে সই করে নেত্রীকে দেওয়া হয়েছে।
জেলার সাত দলীয় বিধায়ক, ইটাহারের মোশারফ হোসেন, চাকুলিয়ার মিনহাজুল আরফিন আজাদ, করণদিঘির গৌতম পাল এবং হেমতাবাদের সত্যজিৎ বর্মন-সহ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে সদ্য যোগ দেওয়া দুই বিধায়ক কালিয়াগঞ্জের সৌমেন রায় ও রায়গঞ্জের কৃষ্ণ কল্যাণীর সই করা আবেদনপত্র দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে অমল আচার্য বলেন, “আমি আমার বক্তব্য আগেই দলের কাছে জানিয়েছি। এবার তাঁরা বিচার করবেন আমায় নেবেন কি না। আমি যে ষড়যন্ত্রের শিকার তা নেত্রীকে বলেছি। নেত্রীর প্রতি আমার আস্থা আছে।”
দলের সূত্রে জানা যায়, অমল আচর্যকে যেন দলে নেওয়া না হয়, এমন দাবি করে যে চিঠি মমতা, অভিষেক আর রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে পাঠানো হয়েছে তাতে জেলার সাতজন বিধায়ক সই করেছেন। মূলত ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেনের সক্রিয় ভূমিকায় গত সপ্তাহে জেলার সাত বিধায়ক-সহ দলীয় জেলা সভাপতি কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বিজেপির অমল আচার্যকে তৃণমূলে না ফেরানোর আবেদন জানানো হয়। এ ব্যাপারে শুক্রবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “বিষয়টি দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ফলে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।”
এ বিষয়ে মূল উদ্যোগী ইটাহারের বিধায়ক তৃণমূলের মোশারফ হোসেন বলেন, “অমল আচার্য তৃণমূলে (TMC) ফিরলে আবার জেলায় দলে গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হবে। অমলবাবু তৃণমূলে থাকাকালীন চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা তুলছেন। দুর্নীতি থেকে বাঁচার জন্য ফের তৃণমূলে আসার চেষ্টা করছেন অমলবাবু। তাছাড়া অমল তৃণমূলে পুনরায় যোগ দিলে দল ভেঙে যাবে।” তিনি আরও বলেন, এজন্য জেলার বিধায়করা ৩ জানুয়ারি কলকাতায় গিয়ে দলীয় নেত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি। তবে চোপড়ার দলীয় বিধায়ক হামেদুল রহমান অসুস্থতার জন্য জেলার বাইরে রয়েছেন এবং ইসলামপুরের বিধায়ক আবদুল করিম চৌধুরী বার্ধক্যজনিত কারণে কলকাতায় যেতে পারেননি। তবে ফোনে তাঁরা সম্মতি জানিয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, ইটাহারের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অমল আচার্য গত বিধানসভা ভোটের কয়েকদিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। কিন্তু ভোটে বিজেপি ধরাশায়ী হওয়ার পর থেকেই ফের তৃণমূলে যোগ দিতে তৎপর হয়ে উঠেন। মাস কয়েক আগে ‘জাগো বাংলা’র পুজোবার্ষিকী প্রকাশ অনুষ্ঠানে মমতার সঙ্গে দেখা করেন অমল। দূরে থাকলেও তাঁকে নেত্রী দেখে হাত দেখান বলে দাবি অমলের। তার পরে বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু হয় বলে খবর। পুরভোটের আগে বা পরে অমলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হতে পারে এমন ইঙ্গিত পেয়ে জেলা নেতৃত্ব চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য নেতৃত্বকে। এ বিষয় বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, “আমি জানি অমল আচার্য বিজেপিতে আছেন। এখন ওঁর যদি দলবদলের ইচ্ছা হয়, তাহলে কাউকে আটকে রাখার রাজনীতিতে বিজেপি বিশ্বাসী নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.