Advertisement
Advertisement

Breaking News

করোনা যুদ্ধজয়ী ছাত্রী

‘ভয় পাবেন না করোনাকে’, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে সাহস জোগাচ্ছেন হাবড়ার ছাত্রী

স্কটল্যান্ড থেকে ফিরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মনামী বিশ্বাস।

'Don't get panic by the name Corona', student assures after coimg back from COVID-19
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 1, 2020 10:05 am
  • Updated:April 1, 2020 10:05 am  

স্কটল্যান্ডে গিয়েছিলেন রিসার্চের কাজে। সেখান থেকে মার্চের মধ্যভাগে দেশে ফেরার পর সচেতন হয়ে নিজেই পরীক্ষা করিয়েছিলেন হাবড়ার মনামি বিশ্বাস। রিপোর্টে দেখা যায়, তিনি নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের আইসোলেশনে ভরতি করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। সুস্থ হয়ে মঙ্গলবার তিনি বাড়ি ফেরেন। এখনও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে তাঁকে। তার আগে করোনা যু্দ্ধ সামলে ফেরার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন সংবাদ প্রতিদিনের সঙ্গে।

করোনা হলেও বাঁচা যায়। আমাকে দেখুন। আজ আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। বাড়ি ফিরে এসেছি। তাই করোনাকে ভয় পাবেন না। অযথা আতঙ্কে ভুগবেন না। সতর্ক থাকুন, সাবধানে থাকুন। চিকিৎসা হলে করোনাও ভাল হয়। অনেকদিন পর আমার মুখে আবার হাসি এসেছে, নতুন জীবন পেয়েছি মনে হচ্ছে। কিন্তু আমার জীবনেও খারাপ সময় গিয়েছে। প্রথম যেদিন করোনার রিপোর্ট পজিটিভ এল, খুব ট্রমাটাইজড হয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তাররাই আমার কাছে এসে বলেছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। আমি ভাল আছি। ঠিক হয়ে যাব। রেগুলার কাউন্সেলিং করতেন। সেই সময়টা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়। আমার বাবা, আমার বয়ফ্রেন্ডকে হেনস্তা হতে হয়েছে। সবাই বাজে ব্যবহার করেছেন তাঁদের সঙ্গে। সেসব কথা শুনে খুব কষ্ট হত তখন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মানবিক, রেশন কার্ডহীন ১৬ লক্ষ মানুষকে ছ’মাসের ফুড কুপন দিচ্ছে রাজ্য]

সবথেকে কষ্টের কী জানেন? আমার যে হাসপাতাল থেকে ছুটি হল, আমায় কেউ নিতেও আসতে পারেনি। আসলে সবাই তো এখনও কোয়ারান্টাইনে। একাই অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে হাবড়ার বাড়িতে ফিরেছি। বাবাকে একটা পরিত্যক্ত বাড়িতে থাকতে হয়েছে। এগুলো আমার কাছে খুব বেদনাদায়ক। তবু আমি হেরে যাইনি। সব থেকে বড় জিনিস মনের জোর। তাই সবাইকে বলছি, সেটা কখনও হারাবেন না। আর যঁারা না থাকলে আমি নতুন জীবন পেতাম না, তঁারা ওখানকার ডাক্তারবাবুরা। খুব, খুব ভাল। ডাক্তারবাবুরা এসে রোজ গল্প করে গিয়েছেন আমার সাথে। আইসোলেশনে শুয়ে নেটফ্লিক্সে সিনেমাও দেখেছি আমি। ফোনে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলেছি। খুব ভাল চিকিৎসা হয়েছে আমার।

তাই আবারও বলছি করোনার নাম শুনেই ভয় পাবেন না। অযথা আতঙ্কে ভুগবেন না। আমিও যেমন সন্দেহের বশে পরীক্ষা করাতে এসেছিলাম। আপনাদেরও যদি জ্বর না কমে, বা করোনার কোনও উপসর্গ দেখা দেয়, তবে গিয়ে পরীক্ষা করান। আর আমি তো অন্য দেশ থেকে ফিরেছি। আবার আক্রান্তও হয়েছি। আমি বলছি, লকডাউন যদি মেনটেইন করতে পারে সাধারণ মানুষ, তবে সবাই ঠিকঠাক থাকবে।

[আরও পড়ুন: টাকা জমা না দিলেও ১ মাস কাটা যাবে না কেবল কানেকশন, নির্দেশ রাজ্যের]

আমি যখন ফিরলাম, মুম্বই এয়ারপোর্টে হালকা টেমপারেচার এসেছিল। ভাবলাম, আমার চেক করিয়ে নেওয়াটা ঠিক হবে। এয়ারপোর্টেই একটা ফর্ম ফিলআপ করে বলেছিলাম আমার টেমপারেচার আছে। তাই স্ট্যাম্প মেরে দিয়েছিল। তারপর এখানে এসে দেখেছিলাম জ্বর নেই। আমি হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতেই পারতাম। কিন্তু থাকিনি। আমি নিজে থেকে আইসোলেশনে এসেছিলাম। মনে হয়েছিল, এই অসুখে যদি আক্রান্ত হই, তবে শুধু আমি হব তেমনটা নয়। আমার চারপাশের মানুষও আক্রান্ত হবে। আমার পরিবার হবে। সেকথা ভেবেই বেলেঘাটা আইডি পৌছে গিয়েছিলাম। শুরুতে আতঙ্ক হলেও পরে এই যুদ্ধ জয়ের শপথ নিয়েছিলাম।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement