তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (University of North Bengal) উপাচার্য তথা এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য গ্রেপ্তার হতেই শোরগোল উত্তরের শিক্ষামহলে। গোটা উত্তরবঙ্গবাসীদের জন্য এটাকে লজ্জ্বার দিন বলে অনেকে দাবি করেছেন। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পোড়ানো হচ্ছে বেশ কিছু নথি। কিন্তু কী নথি? ভিডিও টুইট করে সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে আগেই নাম জড়িয়েছিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা এসএসসির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যের। সোমবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এটা রাজ্যের শিক্ষা জগতের কাছে একটি ‘কালো দিন’ বলে ব্যখ্যা করেছে শিক্ষাবিদ থেকে রাজনৈতিকমহল। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী থেকে শুরু করে প্রাক্তন আধিকারিক। উপাচার্যের গ্রেপ্তারি নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “লজ্জার দিন উত্তরবঙ্গের জন্য। এর পিছনে শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি মদত রয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তণী তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেন, “উত্তরবঙ্গের শিক্ষা জগতের জন্য একটি কালো দিন। অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। এই ঘটনায় আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।”
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমিতির তরফে অর্ধেন্দু মণ্ডল বলেন, “আমাদের লজ্জ্বায় মাথা নিচু হয়ে গিয়েছে। তার গ্রেপ্তারি খালি সময়ের অপেক্ষা ছিল। গোটা শিক্ষা জগতের কাছে এটি লজ্জ্বার দিন।” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এর আগে শিক্ষা জগতে কোনওদিন কোন উপাচার্য দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়নি। সিবিআইয়ের হাতে উপাচার্যের গ্রেপ্তারির ঘটনা উত্তরের শিক্ষার জন্য কালো দিন।” বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক দেবব্রত মিত্র বলেন, “একজন প্রাক্তনী তথা অধ্যাপক হিসেবে মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে আমার।” যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক প্রাক্তনী তথা শিলিগুড়ি পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, “আইন আইনের পথেই চলবে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত মিডিয়া ট্রায়াল করা ঠিক না।”
এসবের মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও। দেখা যায়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাতের অন্ধকারে জ্বালানো হচ্ছে নথি। সেই ভিডিও টুইট করেন রাজ্যের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি লেখেন, “উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাতের অন্ধকারে নথি জ্বালাতে দেখা যাচ্ছে কিছু ব্যাক্তিকে। এই নথি জ্বালানোর উদ্দেশ্য কী? কিসের তথ্য গোপন করতে কী কী নথি জ্বালিয়ে ফেলা হল? ঘটনার তদন্ত দাবী করছি।” এ বিষয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন সুভাষচন্দ্র রায় বলেন, “একেবারে উড়ো খবর। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরানো কিছু ফেলে দেওয়া কাগজ পোড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ নথি নয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.