শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: দেবী চৌধুরাণী। কালীপুজোর প্রাক্কালে ফের ইতিহাসের এই চরিত্রকে ফিরে দেখা। নারীশক্তির অন্যতম উদাহরণ বঙ্কিমচন্দ্রের এই নায়িকাকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুঁজতে চাইছেন জলপাইগুড়ির এক তরুণ পরিচালক।
[কুলো কেটে কালীর জিভ, বড়বেলুনের বড় মায়ের মাহাত্ম্য বহু দূর]
১৭৭৬। মন্বন্তরপীড়িত জলপাইগুড়ির তিস্তাপারের বাসিন্দাদের কাছে দেবী রূপে আবির্ভাব ঘটেছিল এক নারীর। তিনি মন্থনার জমিদার জয়দুর্গা। একদিকে ইংরেজ শাসন, আর অন্যদিকে ইংরেজদের তাঁবেদার দেবী সিংহর অত্যাচার। এরই প্রতিবাদে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন জয়দুর্গা। মতামত জানাতে গিয়ে পাশে পান ফকির বিদ্রোহের অন্যতম নেতা মজনু শাহকে। ব্রিটিশ বিরোধীর লড়াইয়ে তাঁদের সঙ্গে হাত মেলান সন্ন্যাসী বিদ্রোহের নায়ক ভবানী পাঠক। তথাকথিত ধনীদের বাড়িতে হানা দিয়ে অর্থ এবং খাদ্য সংগ্রহ করে গরিবের হাতে তুলে দেন তিনি। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনায় ওই সাহসিনীই হয়ে ওঠেন ‘দেবী চৌধুরাণী’। তিস্তাপারের জনপদে মানবী থেকে দেবীরূপে তিনি পুজিতা হন। ইতিহাসবিদদের কথায়, কালী শক্তির উপাসক ছিলেন তৎকালীন নারী শক্তির অন্যতম উদাহরণ জয় দুর্গা দেবী চৌধুরাণী। জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া শিকারপুরের মন্দিরে আজও কালীপুজোর রাতে মা কালীর পাশাপাশি পুজিতা হন দেবী চৌধুরাণী এবং ভবানী পাঠক।
[অচল কয়েনও ‘সচল’, তাহেরপুরে শ্যামার আরাধনায় এটাই বার্তা]
আড়াইশো বছর আগের ইতিহাসের সেই নারীকে তথ্যচিত্রে বন্দি করছেন জলপাইগুড়ির এক তরুণ পরিচালক। তুলে ধরার চেষ্টা করছেন ১৭৭৬-এর সেই নারী শক্তিকে। পাশাপাশি বর্তমান প্রেক্ষাপটে কী অবস্থায় রয়েছেন আজকের দেবী চৌধুরানিরা সেই বিষয়ও ক্যামেরাবন্দি করে চলেছেন তিনি। এর আগে ছায়াছবি, ছোট পর্দায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দেবী চৌধুরাণীকে। এসবের থেকে কেন আলাদা এই তথ্যচিত্র? এই নিয়ে জবাবে পরিচালক অগ্রদীপ ঘটক বলছেন, দেবী চৌধুরাণী বাংলার প্রথম বিদ্রোহী নারী। এই ডকুমেন্টারির মধ্যে দিয়ে সেই সময়টিকে ধরার চেষ্টা করছি। দেবীর আলোকে বর্তমান সময়ে মহিলাদের উত্থানের কথাও তুলে ধরা হবে। এবছরের শেষ বা আগামী বছরের শুরুতে জলপাইগুড়ির অগ্রদীপের তথ্যচিত্র মুক্তি পাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.