সৈকত মাইতি, তমলুক: ফের জটিল অস্ত্রোপচার করে নজির গড়ল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতাল। চিকিৎসকদের দক্ষতায় প্রাণ বাঁচল এক শ্রমিকের। তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। স্বস্তিতে রোগীর পরিবারের লোকেরাও।
[ সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের ‘গাফিলতি’, হাত খোয়ালেন রোগী]
পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের পূর্ব শ্রীরামপুর গ্রামে বাড়ি মাধব দত্তের। শ্রমিকের কাজ করে দিন গুজরান করেন তিনি। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, পূর্ব শ্রীরামপুরেরই মহাপাত্র পাড়ায় নতুন একটি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। রোজকার মতো সোমবার বিকেলেও এক সঙ্গীকে নিয়ে সেখানেই কাজে গিয়েছিলেন মাধব। বিকেলে যখন ছাদে কাজ করছিলেন, তখন আচমকাই পা পিছলে পড়ে যান তিনি। নির্মীয়মাণ বাড়িটির নিচে ছিল একটি কাঠের তক্তা। প্রায় আড়াই ইঞ্চি কাঠের টুকরো মাধবের গলায় নুলির খুব কাছে গিঁথে যায়। ঠিকমতো নিঃশ্বাসও নিতে পারছিলেন না তিনি। ওই অবস্থায় মাধব দত্তকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় মহিষাদলের বাসুলিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় তমলুকে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে। তড়িঘড়ি গলায় অস্ত্রোপচার করে কাঠের টুকরোটি বের করার উদ্যোগ নেন চিকিৎসকরা। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে অস্ত্রোপচার। গলায় গিঁথে যাওয়া কাঠের টুকরোটি বের করা গিয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ অমিত কুমার খাঁড়া জানিয়েছেন, ওই শ্রমিকের গলায় কাঠের টুকরোটি এমনভাবে আটকে গিয়েছিল যে, বাইর থেকে স্পষ্ট বোঝাও যাচ্ছিল না। অস্ত্রোপচারে দেরি হলে রোগীর প্রাণ সংশয় হতে পারত। এদিকে আচমকাই এমন বিপদে পড়ে কার্যত দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলেন মাধব দত্তের পরিবারে লোকেরা। মাধবের ভাই জানিয়েছেন, ‘আমাদের পরিবারের সকলেই খেটে খায়। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য নেই। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারবাবুদের চেষ্টায় এ যাত্রায় দাদার প্রাণ বাঁচল।’
[১০ বছর পর খোঁজ মিলল ছেলের, ঘরে ফেরার অপেক্ষায় পরিবার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.