রাজা দাস, বালুরঘাট: রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ করতে বড়সড় পদক্ষেপ নেওয়া হল৷ তদন্তের রিপোর্ট মিলতেই দুই চিকিৎসক-সহ তিনজন নার্সের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করল জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। বালুরঘাট সদর বা জেলা হাসপাতালে এক প্রসূতির উপর অত্যাচার এবং তাঁর সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনায় বসেছিল তদন্ত কমিটি। অভিযোগ মিলতেই শুরু হয় তদন্ত।
আগেই অবশ্য এক মূল অভিযুক্ত এক চিকিৎসককে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। এবার তদন্ত রিপোর্টে গাফিলতির বিষয়টি সামনে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রসূতি বিভাগ থেকেও একজন সিনিয়র নার্সকেও অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এছাড়াও এই হাসপাতালের একজন মহিলা চিকিৎসক ও তিনজন নার্সকে শোকজ নোটিস দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরিষ্কার হয়েছে কর্তব্যে গাফিলতি ছিল। সেকারণে একজন চিকিৎসক ও তিনজন নার্সকে এর শোকজের উত্তর দিতে বলা হয়েছে। একজন চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। শোকজের পর তাদের বিরুদ্ধে যা ব্যবস্থা গ্রহণ করার, তা হবে।’
[ আরও পড়ুন: মোবাইল নিয়ে ঝগড়া, আত্মহত্যার পথ থেকে দিদিকে বাঁচিয়ে নিজের প্রাণ বলি দিল ভাই ]
প্রসঙ্গত, কুমারগঞ্জ থানার গোবিন্দপুরের পালপাড়া এলাকার বাসিন্দা জয়দেব পাল স্ত্রী বৃষ্টিকে গত ২৭ মে, রাত দু’টোর সময় প্রসব বেদনা নিয়ে বালুরঘাট হাসপাতালে ভরতি করান। সেদিন প্রাথমিকভাবে দেখে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে বাড়ি যেতেই ফের প্রসব বেদনা ওঠে। ওই দিন রাতে ফের তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অভিযোগ, রাতে নর্মালে প্রসবের জন্য পুশআপ করার নামে পেটে চড়, লাথি মারা হয়। তবে অবস্থা বেগতিক দেখে রাতেই অস্ত্রোপচার করা হয়। বৃষ্টিদেবী সন্তানের জন্ম দেন।
তবে সন্তানের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ থাকায় তাকে কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছিল। চিকিৎসা চলছিল। রবিবার রোগীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও মারধরের অভিযোগ দায়ের হয় জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে। সোমবারই সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়৷ মৃত শিশু কোলে নিয়েই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় পরিবারের লোকজন। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন তাঁরা। এদিকে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বালুরঘাট থানার আইসি ও ডিএসপি হেড কোয়ার্টারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। চিকিৎসক অরূপ দে ও কর্তব্যরত নার্সদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছিল মৃত শিশুর বাবা।
বিক্ষোভের মুখে পড়ে ওই দিনই একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট গত শনিবার জমা পড়েছিল। সোমবার সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই মোট তিনজন নার্স ও একজন মহিলা চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। আগেই অভিযুক্ত এক চিকিৎসককে গঙ্গারামপুর হাসপাতালে বদলি করে দেওয়া হয়েছে।
[ আরও পড়ুন: অসন্তোষের আঁচে তপ্ত মণিরুল, বিজেপি নেতৃত্বকে পাঠালেন ইস্তফাপত্র ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.