Advertisement
Advertisement

বাধা নয় পরিকাঠামো, পিত্তনালিতে বিরল অস্ত্রোপচার বাঁকুড়া মেডিক্যালে

একটি মাত্র ফুটো করেই রোগীর পেট থেকে বের করা হল পাথর।

Doctors perform critical surgery
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:January 31, 2019 3:44 pm
  • Updated:January 31, 2019 3:44 pm  

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ২০০৯ সালে ‘থ্রি ইডিয়টস’ নামে সুপারহিট হিন্দি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। চলচ্চিত্রটিতে দেখা যায় একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ৩ জন ছাত্র নানা সময় নানা কাণ্ড ঘটিয়ে বসে। ওই সিনেমারই শেষ অংশে ওই তিন ছাত্র ভিডিও কলের মাধ্যমে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসাবিদ্যার যন্ত্রাংশের বদলে ‘ভ্যাকুয়াম টিউবের’ সাহায্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনের মেয়ের সন্তান প্রসব করান।

এবার বাস্তবেও ঠিক একই কায়দায় সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ না থাকা সত্ত্বেও হাতের কাছে থাকা দু’টি সাধারণ যন্ত্রাংশ দিয়ে জটিল অস্ত্রোপচার করলেন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। রোগীর পিত্তনালি থেকে বের করা হল পাথর। উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও ফের জটিল অস্ত্রোপচারে বড় সাফল্য পেল এই হাসপাতাল। আরও বড় সাফল্য এই যে, ওপেন সার্জারি নয়, স্রেফ পেটে একটি মাত্র ফুটো করেই রোগীকে বিপদ মুক্ত করেছেন এই চিকিৎসকরা। চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় এই অস্ত্রোপচারের পোশাকি নাম হল ‘ল্যাপ্রোস্কপিক কোলোসিসটেকটমি কোলেডোক লিথটার্ম’। ঝুঁকিপূ্র্ণ এই অস্ত্রোপচার এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে অন্য জেলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোথাও কোথাও হয়ে থাকলেও বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এর আগে কখনও হয়নি। এমনটাই দাবি করছেন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজন কোলডস্কপির যন্ত্রাংশ। কিন্তু এখানে সেই সমস্ত যন্ত্রাংশ নেই। তা সত্ত্বেও এই ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করে রোগীকে সুস্থ করে তুলেছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

মামার বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী, জন্মভিটেয় এসে খুঁজে পেলেন পৈতৃক গ্রাম ]

গত ২৩ জানুয়ারি চিকিৎসক উৎপল দে’র নেতৃত্বে একটি দল অস্ত্রোপচার করেন। দীর্ঘদিন ধরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে পেটের যন্ত্রনায় ছটফট করছিলেন ছায়া অঙ্কুর। দুর্গাপুরের বাসিন্দা তিনি। ছায়া দেবীর ছেলে অশোক অঙ্কুরের কথায়, “গত কয়েক মাস ধরেই মা পেটের যন্ত্রণায় মুষড়ে পড়েছিলেন। বার বার জন্ডিসে আক্রান্ত হচ্ছিলেন তিনি। লোকমুখে ভালো চিকিৎসার সুনাম শুনে মাকে আমরা দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসি।” উৎপলবাবু বলছেন, “সংশ্লিষ্ট অস্ত্রোপচারের জন্য যন্ত্রাংশ ছিল না এই হাসপাতালে। তবে গত কয়েক বছর আগেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই মেডিক্যাল কলেজে বেশকিছু নতুন নতুন যন্ত্রাংশ এসেছে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম ফুসফুসের চিকিৎসার জন্য অথবা শ্বাসনালীতে কোনও কিছু আটকে গেলে তা বাইরে বের করার যন্ত্র এবং নাক, কান, গলা বিভাগের জন্য একটি বিশেষ যন্ত্র। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় হল ব্রংকোসকপি এবং ল্যাপ্রোস্কপি। এই দুই যন্ত্র দিয়ে কোলডোসকপির কাজ করে জটিল অস্ত্রোপচার করে পিত্তথলি থেকে বেরিয়ে পিত্তনালীতে বসে থাকা পাথর বের করার পর স্থিতিশীল ওই বছর পঞ্চাশের বৃদ্ধা। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, চলচ্চিত্রে যেটা সম্ভব, সেটা বাস্তবে অনেক সময় সম্ভব নয়। তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছাড়াই ঝুঁকিপূর্ণ এই চিকিৎসার পর রোগীর মুখে হাসি দেখে চিকিৎসরা ওই চলচ্চিত্রের সংলাপের মতো করে বলছেন, ‘অল ইজ ওয়েল’।

ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে নিখোঁজ যুবক, মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ পরিবার ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement