সৌরভ মাজি, বর্ধমান: চিকিৎসার গাফিলতিতে গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে কালনা মহকুমা হাসপাতালে তাণ্ডব চালাল রোগীর পরিবার। এমনকী নার্স, চিকিৎসকদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল। দীর্ঘক্ষণ পর কালনা মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। রোগীর আত্মীয়দের হামলার প্রতিবাদে নার্সরা দফায় দফায় হাসপাতাল সুপারের ঘরে বিক্ষোভ দেখান। চলে অবস্থানও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে কালনা থানার পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
কালনার নান্দাই মির্জাপুরের বাসিন্দা বিন্তি বিবি। তাঁর বাপের বাড়ি কালনার নিভূজিবাজারে। রবিবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে তাঁকে কালনা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাঁর পরিজনদের অভিযোগ, রাতে পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হলেও বিন্তির কোনও চিকিৎসাই করা হয়নি। সোমবার দুপুরে পরিবারের লোকজনদের জানানো হয়ে গর্ভস্থ সন্তানটি মারা গিয়েছে। বিন্তির জেঠু খাদেম শেখ বলেন, “হাসপাতালে কোনও চিকিৎসাই হয়নি। সকালের দিকে আমরা নার্সিংহোমে নিয়ে যেতে চাইলে তা করতে দেয়নি। দুপুরে বলে বাচ্চা মারা গিয়েছে। নার্সদের বলতে গেলে তারা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।” তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতিতেই মারা গেল বাচ্চাটি। এরপরই রোগীর পরিবারের লোকজন হাসপাতালে জড়ো হয়। তাণ্ডব চালায় তাঁরা। চলে ব্যাপক ভাঙচুর। মারধর করা হয় চিকিৎসক, নার্সদের।
কর্তব্যরত নার্স ঈশানী রাহা বলেন, “আমার গলা চেপে ধরে। চিকিৎসক, নার্সদের ব্যাপক মারধর করেছে ওরা। আমাদের প্রশ্ন এতজন মিলে একতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত উঠে এল কীভাবে। কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। না সিভিক, না পুলিশ কেউ ছিল না। শুধু আমাদের ওয়ার্ডেই নয় অন্যান্য ওয়ার্ডের যাকেই হাতের কাছে পেয়েছে তাঁদের সবাইকে মারধর করা হয়েছে।” পরে পুলিশ এসে হামলাকারীদের হঠিয়ে দেয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, “আমাদের নিরাপত্তাকর্মীদের মারধর করে আচমকাই ঢুকে পড়ে হামলাকারীরা। পুলিশকে বলা হয়। পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকি হামলাকারীদেরও গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।”
ছবি: মোহন সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.