তরুণকান্তি দাস: পরিকাঠামো থাকলেও উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছে না রোগীরা। আকছার এ অভিযোগ শোনা যায় রোগীর আত্মীয়দের কাছে থেকে। বিরোধীরাও বারবার রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেছেন। রাজ্যে প্রচুর নতুন হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হলেও চিকিৎসার অভাবে সত্যিই অনেক জায়গায় সমস্যায় পড়তে হয় আমজনতাকে। আর এই চিকিৎসকের ঘাটতির জন্য কেন্দ্রের ভুল নীতিকেই দায়ী করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্যে চিকিৎসকের আকাল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।তিনি বলেন, কেন্দ্রের ভুল নীতির জন্যই অভাব পড়ছে চিকিৎসকের। রাজ্যস্তরে কাজে যোগ দিতে চাইছেন না চিকিৎসকরা। ২৫০০ চিকিৎসক চাইলে ইন্টারভিউ দিতে আসছেন ২ হাজার, কাজে যোগ দেওয়ার সংখ্যা আরও কম, মোটে দেড় হাজার। চিকিৎসকরা বিদেশে চলে যাচ্ছেন, অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন। চিকিৎসক তৈরি করতে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এরাজ্য থেকে প্রশিক্ষিত হয়ে অন্য রাজ্যে চিকিৎসা করতে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা, কেউ কেউ আবার প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করছেন। গ্রামের দিকে কেউ যেতেই চাইছেন না।
আসলে মেডিক্যালের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের অভিন্ন প্রবেশিকা চালুর সিদ্ধান্তকেই কাঠগড়ায় তুলতে চেয়েছেন মমতা। অভিন্ন প্রবেশিকা চালু হওয়ার ফলে অন্য রাজ্যের ছেলে-মেয়েরা এরাজ্যে এসে মেডিক্যালে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে, আবার কোর্স শেষে চলে যাচ্ছেন নিজের রাজ্যে। স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসকের ঘাটতি পড়ছে বাংলাতে। বিধানসভায় এদিন মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চাইলেন, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পরিকাঠামো খাতে প্রচুর ব্যয় করতে হচ্ছে রাজ্যকে। এর জেরে চিকিৎসকদের প্রচুর বেতনের চাহিদা সবসময় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিধানসভায় মমতা বলেন, “সবার অনেক দাবি আছে জানি। কিন্তু বুঝতে হবে কতটা দিতে পারি আমরা। প্রচুর পরিকাঠামো বাড়িয়েছি। চালু করলাম আবার বন্ধ হয়ে গেল, এই নিয়মে বিশ্বাস করি না। তার চেয়ে যেটা করেছি সেটা ঠিক ভাবে চলুক। স্বাস্থ্য খেতে ২০১০-১১ অর্থবর্ষে বাজেট ছিল ৮৯৯ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ সালে তা হয়েছে ৫৫৩০ কোটি রাজ্যে এখন বিনা পয়সায় ঔষধ পাওয়া যায়। ঝাড়খন্ড, বিহার, নেপাল, বাংলাদেশ থেকে লোক আসেন চিকিৎসা নিতে। আগে মেডিকেল কলেজ ছিল ৯টি এখন হয়েছে ১৭টি। আর নির্মাণকাজ চলছে ৬টি-তে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.