টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: গবাদি পশুর শরীরে যে ফিতাকৃমি থাকে, সেই ফিতাকৃমির ডিম ঢুকে পড়েছিল মানুষে শরীরে! বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করে এক মহিলার প্রাণ বাঁচালেন চিকিৎসকরা। কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধানের বক্তব্য, অন্য জেলার হাসপাতালে পরীক্ষামূলকভাবে এমন জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে আগে হয়নি।
ঘনঘন কাশি আর সঙ্গে রক্তবমি। গত ১৫ জুলাই মর্জিনা বিবিকে বাঁকুড়ার সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকেরা। ওই গৃহবধূর বাড়ি বাঁকুড়ারই সানবাঁধা গ্রামে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গবাদি পশুর শরীরে যে ফিতাকৃমি থাকে, সেই ফিতাকৃমির ডিম ঢুকে গিয়েছিল ওই রোগীর শরীরে। পাকস্থলী ও যকৃতে ডিমগুলি জমে সিস্ট হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচার করতেই হত। কিন্তু বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পরিকাঠামো যে এতটাও উন্নত নয়! সাধারণভাবে এমন রোগীকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়াটা দস্তুর। এক্ষেত্রে তার অবকাশ ছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মর্জিনা বিবির শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল, যে তাঁকে অন্য হাসপাতালে পাঠানো কার্যত অসম্ভব ছিল। শেষপর্যন্ত বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ওই গৃহবধূর অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের পর এখন মর্জিনা বিবি ভাল আছেন বলে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় ফুসফুস থেকে ফিতাকৃমির ডিম বের করার অস্ত্রোপচারের পোশাকি নাম হল ‘কার্ডিও থেরাসিক’। আর বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে এই জটিল অস্ত্রোপচারটি যিনি করেছেন, সেই উৎপল দে জানিয়েছেন, সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে যকৃতের অস্ত্রোপচার আগেও হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে যকৃৎ ও পাকস্থলীতে একইসঙ্গে অস্ত্রোপচার আগে কখনও হয়নি। এদিকে সরকারি হাসপাতালে পরিষেবায় আপ্লুত মর্জিনা বিবির পরিবারের লোকেরা। মর্জিনা বিবির স্বামী রুপ খাঁর সাফ কথা, সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে যদি অস্ত্রোপচার না হত, তাঁর স্ত্রীকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হত।
[আরও পড়ুন: ভুয়ো নিয়োগপত্র, সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার ২ যুবক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.