সঞ্জীব সাহা, বহরমপুর: ফের কাঠগড়ায় রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা। মেডিকা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, অ্যাপোলোর মতো উন্নতমানের হাসপাতালের পর এবার চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ উঠল সামশেরগঞ্জের এক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। সন্তান প্রসবের সময় সন্তানের মাথা ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সামশেরগঞ্জের অনুপনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বরে।
শুক্রবার সুতির বহগালপুরের বাসিন্দা মালতি বিবি (২৫) প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ওই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হন। অভিযোগ, সেখানেই নর্মাল ডেলিভারির সময় চিকিৎসক অভিজিৎ দাশগুপ্ত গর্ভের সন্তানের মাথা ছিড়ে ফেলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে শিশুটির মুণ্ডু কাউকে না জানিয়ে একটি ব্যাগে ভরে দিয়ে রোগীর পরিবারের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে গর্ভবতীকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা বলে তারা। সেখানে রোগীর অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বহরমপুরের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শনিবার সকালে তাঁর প্রসবের অস্ত্রোপচারের সময় দেখা যায় শিশুটির মাথা নেই। এরপরই পরিবারের লোকজন ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের তরফে দেওয়া ব্যাগে শিশুটির বিছিন্ন মুণ্ডু দেখতে পান।
প্রশ্ন উঠছে, যেখানে সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামোকে ঢেলে সাজানোর কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেখানে এরকম চিকিৎসক কীভাবে একটি সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ করতে পারেন। তাঁর মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। মালতি বিবির স্বামী জাহাঙ্গির শেখ জানান, “আমি স্ত্রীকে ভর্তি করে বাড়ি যাই। ওর যে মেডিক্যাল রিপোর্টগুলো আগে পেয়েছিলাম, তা আনতেই বাড়ি গিয়েছিলাম। ৩০ মিনিট পর এসে দেখি আমার স্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী আমার পৌঁছনোর আগেই ওকে গাড়িতেও তুলে দেওয়া হয়। আমাকে একটা ব্যাগ দিয়ে তড়িঘড়ি জঙ্গিপুরে নিয়ে যেতে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে আবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। এখানে এসে সিজারের পর চিকিৎসকরা জানান যে শিশুটির ধরে মাথা নেই। তারপর ওই হাসপাতালের দেওয়া ব্যাগে দেখি ছিন্ন মুণ্ডুটি রয়েছে।” চিকিৎসক অভিজিৎ দাসগুপ্তর বিরুদ্ধে সুতি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মালতি বিবির স্বামী। চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে ওই চিকিৎসকের কড়া শাস্তির দাবি তুলেছে পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.