সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: জনতা কারফিউ-র (Janta Curfew) আগে পুরুলিয়ায় গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। ভেবেছিলেন কয়েকদিন ঘুরে ঝাড়খণ্ডের বোকারোতে ছেলেদের কাছে ফিরে যাবেন। কিন্তু লকডাউনে পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার ডুমরডিতেই আটকে পরেছেন তাঁরা। কয়েকদিনেই শেষ হয়েছে ওষুধ। কী উপায়? ছেলেদের জানিয়েও মেলেনি সুরাহা। খবর জেলাশাসকের কাছে পৌঁছতেই বিডিওর মাধ্যমে ১ মাসের ওষুধ তুলে দেওয়া হল ওই দম্পতির হাতে। জেলাশাসক ও বিডিও-এর এই ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত ওই দম্পতি।
বছর ৭১-এর অনিলকুমার ত্রিপাঠি ও তার স্ত্রী ৬৫-এর মালতি ত্রিপাঠি। তাঁরা জানান, “ওষুধ শেষ হয়েছিল। কী করব বুঝতে না পেরে ছেলেদের জানাই। কিন্তু আন্তঃরাজ্য পরিবহণ বন্ধ। সীমানাও সিল করে দেওয়া হয়েছে। তাই ওঁরা কিছুই করতে পারেনি। এরপরই সমস্যার কথা হোয়াটসঅ্যাপে জেলাশাসককে জানাই। প্রেসসক্রিপশনও পাঠিয়ে দিই। ব্যস, এরপর চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই বিডিওর মাধ্যমে আমরা ওষুধ পেয়ে যাই।” অনিল কুমার ত্রিপাঠি বলেন, “আমি শুনেছি পুরুলিয়ার জেলাশাসক গ্রামে গ্রামে গিয়ে সমস্যা মেটান। তাই আমাদের ওষুধ শেষ হয়ে যাওয়ায় আমি সাহস করে আমার সমস্যার কথা জেলাশাসকের হোয়াটসঅ্যাপে জানিয়ে প্রেসক্রিপশন পাঠিয়ে ছিলাম। ওঁনার সহযোগিতায় আমরা অভিভূত।”
বোকারোর একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন অনিলবাবু। অবসর নেওয়ার পরে সেখানেই বাড়ি করেন। ছেলেরাও থাকেন সেখানেই। কিন্তু মাঝে-মধ্যেই এই প্রবীণ দম্পতি তাদের গ্রামের বাড়িতে এসে সময় কাটান। কিছুদিন আগেই বরাবাজারের ডুমরডিতে আসেন তাঁরা। কিন্তু আর ফিরতে পারেননি। মালতি ত্রিপাঠির কথায়, “আমার স্বামী সুগারের রোগী। আমার কোমর ব্যথা। জেলাশাসক যে এভাবে পাশে দাঁড়িয়ে মুশকিল আসান করবেন তা ভাবতেও পারিনি।” তবে এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি জেলাশাসক। তাঁর কথায়, “এটা আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।” পাশাপাশি, করোনা মোকাবিলায় একসঙ্গে লড়াইয়ের ডাকও দেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.