ফাইল ছবি।
ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পৌষমেলা নিয়ে বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বিশ্বভারতীর। এবার শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় পৌষ উৎসব উপলক্ষ্যে ডিজে বক্স লাগানোকে কেন্দ্র করে শুরু বিতর্ক। আশ্রম এলাকা ‘সাইলেন্স জোন’, সেখানে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কীভাবে এই ডিজে লাগালো, তা নিয়ে সরব হয়েছেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। তাঁর কথায়, ‘সাইলেন্স জোনে’ ৫০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ হলে তা আইন বিরুদ্ধ। ইতিমধ্যেই বিষয়টি জানিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পাশাপাশি জেলা পুলিশকে অভিযোগ করেছেন সুভাষবাবু।
মঙ্গলবার সকাল ৭.৩০ নাগাদ প্রতিবছরের মত পৌষমেলা উপলক্ষ্যে শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় উপাসনা শুরু হয়। সেখানে ছিলেন উপাচার্য, অতিথি-সহ পড়ুয়া, আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা। উপাসনায় রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগীত ভবনের পড়ুয়া ও অধ্যাপকেরা। এক ঘন্টা ধরে চলে অনুষ্ঠান। সোমবার সেই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ছাতিমতলার বেদির চারপাশে কাঠের পাটাতনের উপর বিরাট আকারের সাউন্ড বক্স লাগানো হয়। কিন্তু বিশ্বভারতীর ‘সাইলেন্স জোন’গুলির মধ্যে আশ্রম প্রাঙ্গন অন্যতম। এমন কী ছাতিমতলার নিস্তব্ধ পরিবেশ রক্ষার জন্য সন্ধের পর আলোও নিভিয়ে দেওয়া হয়। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের কথায়, “এরকম এক ‘সাইলেন্স জোন’ এবং এই ধরনের পবিত্র অনুষ্ঠানে ডিজে বক্স ব্যবহার আইন বিরুদ্ধ। পরিবেশ আদালত বিশ্বভারতীর পরিবেশ রক্ষা করতে যেখানে তৎপর সেখানে এই ধরনের কাজ দ্বায়িত্ব জ্ঞানহীনতার পরিচয়। পুরো বিষয়টি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং
বীরভূম পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে।”
এই বিষয়ে ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর প্রশ্ন তোলেন, পৌষ উৎসবের উপাসনায় এত বড় বক্স ব্যবহারের কী প্রয়োজন? কেন বারবার নিয়ম ভাঙা হচ্ছে? তবে পৌষমেলার পরিবেশ রক্ষা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। মেলার মাঠে প্রতিদিন তিনবার করে জল দেওয়া হচ্ছে দূষণ প্রতিরোধে। ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না কোন মাইক। কিন্তু তা সত্ত্বেও জায়গা নিয়ে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, একাধিক ব্যবসায়ী তাদের বুক করা জায়গায় বসতে পারছেন না। অনেকে আবার জায়গা বুক না করেই পসরা সাজিয়ে বসে পড়েছেন। বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুনীল সিংয়ের অভিযোগ, বিশ্বভারতী অনলাইনের বুকিং এর কথা বললেও ২৩ তারিখ টাকা নিয়ে রসিদ কেটে ব্যবসায়ীদের বসিয়ে দিয়েছে। এটা কীভাবে হল? এমনকি একেক জনের থেকে একেক রকম টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে এবিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কোনও মন্তব্য করেননি বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বান সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.