সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মুখে নেই মাস্ক (Mask), বদলে মুখ থেকে নামিয়ে ঝোলানো গলার কাছে। খানিকটা মাফলারের মতো। পুরুলিয়া শহরে মঙ্গলবার সকালে রাস্তায় নেমে পথচলতি মানুষজনকে এভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখে ক্ষুব্ধ হলেন জেলাশাসক। মাস্ক কি মাফলার? এই প্রশ্ন তুলে নাক-মুখ খোলা অবস্থায় পথে বেরনো মানুষজনকে ‘শাসন’ করলেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। শাস্তিস্বরূপ রাস্তাতেই কান ধরে ওঠবোস করালেন নিয়মভঙ্গকারী যুবকদের।
মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি দেখতে রাস্তায় নেমেছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। তাঁর চোখে পড়ে, দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে একটি ওষুধের দোকানে মালিক-সহ কর্মীরা মাস্ককে কার্যত মাফলারের মতো গলা কাছে ঝুলিয়ে রেখেছেন। তাঁদের ধমক দেন জেলাশাসক। বলেন, “নাক-মুখ না ঢেকে হাসপাতালের সামনে ওষুধ দোকান চালাচ্ছেন? আগেও একবার সতর্ক করেছিলাম। এরপর যদি আর কোনওদিন দেখি নাক-মুখ না ঢাকা অবস্থায় আছে, তাহলে ওষুধের দোকানই বন্ধ করে দেব।” অথচ এই ওষুধ দোকানেই দেখা যায়, একাধিক মাস্ক ঝুলছে। এমনকী তা বিক্রিও হচ্ছে।
একইভাবে এদিন পথচলতি মানুষজন, টোটোচালক, ফল বিক্রেতা, ব্যবসায়ীদের মাস্ক যথাযথভাবে ব্যবহার না করার দৃশ্য তাঁর চোখে পড়ে। সবাইকে জেলাশাসকের ধমক খেতে হয়। তিনি বলেন, “সরকার বারবার বলছে, রাস্তায় বার হলেই নাক-মুখ মাস্ক, রুমাল, দোপাট্টা দিয়ে ঢাকুন। পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তবুও কিছু মানুষজন সচেতন হচ্ছেন না। ফলে স্বয়ং মুখমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে মানুষজনকে সচেতন করেছেন। আমরা মানবিক হয়ে মানুষজনকে বলছি। কিন্তু তবুও সব ঢিলেঢালা। তাই আজ রাস্তায় নেমে একটু পদক্ষেপ করতে হল। এবার থেকে পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ প্রশাসনও এই বিষয়ে নিয়মিত অভিযান চালাবে।”
আসলে একসময় দীর্ঘদিন ধরে গ্রিন জোনে থাকা এই জেলাতেও প্রায় ফি দিন করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ বাড়ছে। শহর পুরুলিয়াতেও থাবা বসিয়েছে এই মারণ রোগ। তাই আর কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন। আগেও একবার এভাবে পথে নেমেছিলেন জেলাশাসক। মঙ্গলবারও ফের নিজেই নেমে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি শামিম শওকত, পুরুলিয়া (সদর) মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.