জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ নিয়ে লাগাতার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছএন রাজ্যের শাসকদল। একদিকে যেমন দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ামাত্রই শোকজ করা হচ্ছে অভিযুক্তকে জনপ্রতিনিধিকে, তেমনই যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও স্রেফ ‘স্বজনপোষণ’-এর সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের থেকে সেই অর্থ উদ্ধার করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ উদ্ধারে তৎপর জেলা প্রশাসনও। সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন ব্লকে সেই প্রক্রিয়া শুরু করল জেলা প্রশাসন। ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরতের জন্য তৈরি হয়েছে ফর্ম। সেই ফর্ম ফিল-আপ করে ফেরত দেওয়া যাবে টাকা। ইতিমধ্যেই বনগাঁর এক পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিনজন টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে খবর। অন্যান্য ব্লকেও চলছে এভাবে টাকা উদ্ধারের কাজ।
গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী সর্বদলীয় বৈঠক করে ঘোষণা করেছিলেন, আমফানে যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁদের সঠিক তালিকা তৈরি করতে হবে এবং যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও টাকা পেয়েছেন, তাঁদের টাকা ফেরত দিতে হবে। এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলেও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ পেয়েই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেওয়ার একটি ফর্ম তৈরি করা হয়। সেই ফর্ম ফিলাপ করে ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দিতে পারবেন। বনগা, বাগদা, গাইঘাটা ব্লকে এভাবেই ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অর্থ জমা নেওয়ার জন্য ব্লক ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ক্ষতিপূরণের অর্থ উদ্ধারে যখন এতটাই তৎপর জেলা প্রশাসন, সেসময় এই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বনগাঁয় তৃণমূল পঞ্চায়েতের সদস্যকে ঘিরে বিক্ষোভে শামিল বাসিন্দারা। বনগাঁর ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের বর্ণবেরিয়া এলাকার। অভিযোগ, পাকা বাড়ি থাকলেও পঞ্চায়েত সদস্য সদানন্দ বিশ্বাসের তার ছেলের নামে টাকা নিয়েছেন ও পঞ্চায়েত সুপারভাইজার আনন্দ ঘোষ তাঁর মা ও অন্য তিনজন আত্মীয়র নামে টাকা নিয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এলাকার প্রায় ২৭ জন ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি ৷ যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত তারা টাকা পায়নি।
অপরদিকে, ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের অফিস ঘেরাও করে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা। পঞ্চায়েত প্রধান সমীর বিশ্বাস বলছেন, ”সুপারভাইজারকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত তালিকা তৈরি করতে গিয়ে অনেক ভুলত্রুটি হয়েছে। যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও টাকা পেয়েছেন, তাঁদের সবাইকে তা ফেরত দিতে বলা হয়েছে। না দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.