সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: একটানা বৃষ্টি। তারউপর প্রতি বছরের মতো এবারও ঝাড়খণ্ডের গালুডি ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত গালুডি থেকে ১ লক্ষ ৯০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়। যদিও রাতের পর জল নেমে গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর।তবে প্রশাসন সদা সতর্ক, কোনওরকম বিপদের সম্ভাবনা দেখলেই অন্যত্র স্থানান্তরিত করে দেওয়া হবে স্থানীয় মানুষজনকে।
সোমবার ভোরে ব্যারেজের জলে সুবর্ণরেখা নদীতে জলস্ফীতির জেরে ঝাড়গ্রাম ব্লকের গোপীবল্লভপুর এক, গোপীবল্লভপুর দুই, নয়াগ্রাম,সাঁকরাইল ব্লকের নদী তীরবর্তী গ্রামের মানুষদের সতর্ক করা হয়েছে। নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। পাশাপাশি নদীতে স্নান করতে যেতেও নিষেধ করেছে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্লকগুলিকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।নদীতে জল বেড়ে নদী তীরবর্তী এলাকায় ঢুকে পড়ার আগেই মানুষজনকে সরানোর ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে ব্লকগুলিতে। যে কোনওধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ব্লক প্রশাসন। জেলার চারটি ব্লকে নদী কিনারার গ্রামগুলিতে সোমবার দিনভর
প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।
সকাল থেকে কিছুটা সময় পর্যন্ত রোদের মুখ দেখা গেলেও দুপুর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রীতিমত মুষলধারায় বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধে পর্যন্ত বৃষ্টি এবং ব্যারেজের ছাড়া জলে সুবর্ণরেখার জল বিপদসীমার উপরে উঠে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল। জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইলে তীরবর্তী নিচু এলাকাগুলি প্লাবিত হতে পারে। তাই প্রশাসনের তরফে ব্লকগুলিতে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ত্রিপল, শুকনো খাদ্য মজুত রাখা হচ্ছে।
প্রশাসন সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, গালুডি থেকে জল ছাড়ার ফলে ইতিমধ্যে সুবর্ণরেখা নদীতে জল বেড়েছে।
তবে মঙ্গলবার সকালের খবর অনুযায়ী, বিপদসীমার নিচ দিয়েই বইছে সুবর্ণরেখা। ফলে আপাতত বিপদের কিছু নেই। তবে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। যে কোনও সময়ে মানুষজনকে সরানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “গালুডি থেকে জল ছাড়া হয়েছে। যেসব ব্লকগুলি দিয়ে সুবর্ণরেখা নদী বয়ে গিয়েছে সেই সব ব্লকের মানুষজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। মাইকিং করা হয়েছে ওই সব জায়গায়। মানুষ যাতে নদীতে না যান তার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।প্রশাসন সব বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত।”
গোপীবল্লভপুর এক ব্লকের বিডিও দেবজ্যোতি পাত্রের কথায়, “যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে। আমরা বেশ কিছু গ্রাম শনাক্ত করেছি। প্রয়োজন হলে মানুষজনকে সরানো হবে। জল বাড়লেও বিপদ সীমার উপরে যায়নি।”
ছবি: প্রতীম মৈত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.