ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: লোকসভা নির্বাচনের গেরুয়া শিবিরের দুর্দান্ত ফলাফলের পর দলে দলে বিজেপিতে যোগদান তৃণমূলকর্মীদের৷ এরাজ্যের শাসকশিবির থেকে প্রায় গণহারে দলত্যাগের ঘটনা ঘটেই চলেছে৷ সেই প্রবাহ দেখেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল বিজেপির অন্দরে একটা গোলযোগ বাঁধতে চলেছে৷ বাস্তবে হলও তাই৷
তৃণমূলত্যাগী নেতাদের রীতিমত ‘আবর্জনা’ বলে চিহ্নিত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতানেত্রীরা৷ এই ক্ষোভ একেবারে তুঙ্গে উঠল বুধবার লাভপুরের বিধায়ক মণিরুল ইসলাম বিজেপিতে যোগদানের পর৷ ভোটের আগে দলবদল করে বিজেপিতে যাওয়া বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র স্ত্রী সুজাতা নিজের ফেসবুকে পাতায় রীতিমতো বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন৷ তিনি লিখেছেন, ‘তৃণমূলের আবর্জনাগুলিকে দয়া করে আমাদের বিজেপিতে নেওয়া বন্ধ করুন৷ আমরা বিজেপিকে খুব ভালবাসি, তাই দলটার সম্মান কমে যাক, চাই না৷’ এই পোস্টের পর লাইক, শেয়ারের বন্যা বয়ে গিয়েছে৷ তাঁকে সমর্থন করেছেন অনেকেই৷
আরেকদিকে, মণিরুলের যোগদানের পর গর্জে উঠেছেন হাওড়ার পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত৷ তিনিও ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এর প্রতিবাদ করেছেন৷ তাঁর বক্তব্য, মণিরুলদের অত্যাচার থেকে বাঁচতেই মানুষ তাঁদের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন৷ তাহলে সেই ব্যক্তিদেরই কেন বিজেপিতে নেওয়া? এই প্রশ্ন তুলেছেন রন্তিদেব৷ আর এবিষয়ে তিনি সরাসরি দায়ী করেছেন দলবদল করা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরাকে৷ অনুপমই স্থান-কাল-পাত্র বিচার না করে সকলকে হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেওয়াচ্ছে বলে অভিযোগ রন্তিদেব সেনগুপ্তর৷ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে হাওড়ার বিজেপি নেতৃত্বও৷ এমনকী সংঘও প্রকাশ্যে আপত্তি না করলেও, মণিরুলের মতো স্পর্শকাতর ব্যক্তিত্বকে বিজেপিতে নেওয়া নিয়ে একেবারেই খুশি নয় বলে সূত্রের খবর৷ এক আরএসএস নেতার কথায়, বাংলার মানুষকে মূর্খ ভাবলে ভুল হবে৷
সবে বাংলার মাটিতে জয়ের আস্বাদ নিতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির৷ কিন্তু তৃণমূল থেকে বিজেপি তাঁবুতে ভিড় বাড়তে থাকায় অন্দরে অসন্তোষের জেরে সেই স্বাদ বোধহয় এখনই একটু তেতো ঠেকতে শুরু করল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.