রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: গেরুয়া শিবিরে যাওয়ার বছর না ঘুরতেই তৃণমূলে ফিরেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাক্তন সভাপতি তথা দলের অন্যতম ভরসাযোগ্য সংগঠক বিপ্লব মিত্র। মুখে তিনি বলেছেন, বিজেপিতে আদর্শ বলতে কিছু নেই। তাই ফিরেছেন পুরনো শিবিরে। কিন্তু বিপ্লব মিত্রের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে অন্য কথা শোনালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। বললেন, “বিপ্লব মিত্র ও তাঁর ভাই বিজেপিতে সক্রিয় ছিলেন না। ওঁরা দল ছেড়ে চলে যাওয়ায় আমাদের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কোনও ক্ষতি হবে না। তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাতের কারণে বিজেপিতে এসেছিলেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁদের হুমকি দেওয়া চলছিল বলে খবর।”
শুক্রবার ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণ করতে বেরিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। এরপর নিমতলা ভূতনাথ মন্দির লাগোয়া এলাকায় একটি চা-চক্রে যোগ দেন। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বিপ্লব মিত্রের দলত্যাগ নিয়ে বলেন, ”উনি নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। কিন্তু সকলকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। ওনার উপর চাপও ছিল।” দিলীপের আরও ব্যাখ্যা, ”রাজ্যে দলের অনেক কর্মীই মার খাচ্ছেন। সকলকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। বিরোধীদের এ রাজ্যে কী অবস্থা, বিপ্লববাবু নিশ্চয়ই এতদিনে তা বুঝতে পেরেছেন।” তবে বিপ্লব মিত্র এবং তাঁর ভাই প্রশান্ত মিত্র বিজেপি ছেড়ে চলে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না বলে মনে করছেন রাজ্য সভাপতি।
তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে সংগঠক হিসেবে বেশ প্রশংসার সঙ্গে কাজ করেছেন বিপ্লব মিত্র। সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ভরসার দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রাক্তন জেলা সভাপতি। উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের শক্ত জমি তৈরিতে তাঁর ভূমিকা অগ্রণী। এই অবস্থায় গেরুয়া শিবিরও বিপ্লববাবুর উপর ভরসা করে উত্তরবঙ্গে নিজেদের ভিত আরও দৃঢ় করতে চেয়েছিল। যদিও উনিশের লোকসভা ভোটে সেখানে আশাতীত ভাল ফল করেছে বিজেপি, তা সত্ত্বেও বুথ স্তরে সংগঠনের দুর্বলতা ধরা পড়েছে। সেই ঘাটতি মেটানোর জন্য বিপ্লববাবুর উপর নির্ভর করবেন দিলীপ ঘোষরা, সেটা স্বাভাবিক। তাই রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিপ্লব মিত্রর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরায় যতই ক্ষতিকারক নয় বলে মুখে বলুন দিলীপ ঘোষ, অন্দরে কিন্তু নতুন করে চিন্তার মেঘ ঘনাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.