রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ফণী, বুলবুল অথবা বিধ্বংসী আয়লা ততটা ক্ষতি করতে পারেনি সৈকত শহর দিঘার। তবে এসবের দাপটকেও ছাড়িয়ে যেতে চলেছে সুপার সাইক্লোন আমফান। শুধুমাত্র দিঘা সমুদ্রতটই তছনছ হয়ে যেতে পারে। নিমেষে লন্ডভন্ড হয়ে যেতে পারে সাজানো শহর। এমনই আশঙ্কা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের। তাঁদের বিপদবার্তায় চিন্তা বেড়েছে জেলা প্রশাসনেরও। তাই মঙ্গলবার সকাল থেকেই তড়িঘড়ি কাজে নেমেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। লক্ষ্য, আমফান আছড়ে পড়ার আগেই সমুদ্রতট থেকে নিরাপদে সকলকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
ভোরবেলাই ফুঁসছিল সমুদ্র। ঢেউ উঠেছিল সৈকত সরণিতে। জলোচ্ছ্বাসের প্রাবল্য দেখে তখনই অশনি সংকেত পেয়েছিলেন জাতীয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা। খবর পাঠানো হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কাছে। সকাল থেকেই জেলাশাসক পার্থ ঘোষ এবং জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাসের তৎপরতায় সমুদ্র লাগোয়া গ্রামগুলিতে বার্তা পৌঁছে যায়, জিনিসপত্র দ্রুত গুছিয়ে ফেলার জন্য, তাঁদের বাড়ি ছেড়ে সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে হবে। এতদিন লকডাউনের পর সৈকতে সবে দোকান খুলে বসেছিলেন দোকানিরা। কিন্তু আমফান আশঙ্কায় তাও তুলে দেওয়া হয়। এনডিআরএফ-এর তরফে সকাল থেকে মাইকিং করে সকলকে সতর্ক করা হচ্ছে।
কাঁথি মহকুমার মূলত চার পর্যটন স্থল – দিঘা, তাজপুর, শংকরপুর, মন্দারমণিতেই আমফানের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া খেজুরি, নন্দীগ্রাম নদী লাগোয়া এলাকা হওয়ায় সেখানেও ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। আগেরবার আয়লা এবং বুলবুল এসব এলাকাতেও তাণ্ডব চালিয়েছিল। তবে সেসবের ভয়াবহতাকে ছাপিয়ে যেতে চলেছে এবারের সুপার সাইক্লোন আমফান। এই মুহূর্তে দুর্যোগ মোকাবিলায় NDRF’এর তিনটি দল পৌঁছেছে পূর্ব মেদিনীপুরে।
এ তো গেল দিঘা উপকূলের সতর্কতার বিষয়। প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশার বিপদ আরও বেশি। ১৯৯৯ সালে এই ওড়িশার পারাদ্বীপকেই তছনছ করে দিয়েছিল সুপার সাইক্লোন। তাই সেখানেও আগাম সতর্কতা তুঙ্গে। এখানে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের ১৭টি টিম সেখানে কাজ করছে। ইতিমধ্যেই বহু মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রিলিফ ক্যাম্পে। জগৎসিংহপুরে জারি হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। করোনা আবহে কেন্দ্রেরও চিন্তা বাড়িয়েছে আমফান। প্রধানমন্ত্রী নিজে এ বিষয়ে নজর রেখেছেন। আজ ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবাও এনডিআরএফ-এর সঙ্গে আলোচনা করেছেন ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি নিয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.