রঞ্জন মহাপাত্র, দিঘা: চোখের সামনে সমুদ্রের গর্জন। ফুরফুরে বাতাস। এমন এক পরিবেশে সৈকতের ধারে রেলিংয়ে বসে তেলেভেজা, ঘটিগরমের স্বাদ পর্যটকদের মেজাজ বদলে দেয়। এতে জিভ খুশি হলেও অজান্তে শরীরের ক্ষতি হয়। খবরের কাগজের মোড়কে দেওয়া খাবারে বিষাক্ত কালি শরীরে ঢোকে। তার থেকে যত সমস্যা। সৈকত শহরে ঠোঙার দূষণ রুখতে একাই এগিয়ে এসেছেন এক ফেরিওয়ালা। দিঘার ‘ঘটিগরম কাকু’ স্বরাজ ভট্টাচার্য অ্যাসিডমুক্ত কাগজের ঠোঙায় খাবার দেওয়া শুরু করেছেন। এর জন্য পকেট থেকে টাকা দিতে তিনি কাপর্ণ্য করেননি। কারণ উদ্দেশ্যটা দিঘাকে ‘গ্রিন সিটি’ করা।
[ভারতে বিপদে পড়ে রুশ নাগরিকের ভিক্ষা, পাশে বিদেশমন্ত্রী]
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বছর তিনেক আগে খবর কাগজের ঠোঙায় খাবার সরবরাহ বন্ধে নির্দেশিকা জারি করে। কিন্তু তাকে অগ্রাহ্য করে দেদার চলছে খবরের কাগজের ঠোঙার ব্যবহার। সৈকত শহরকে ‘গ্রিন সিটি’ গড়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ। সেই পথে এগোতে গেলে অ্যাসিড ফ্রি কাগজ হতে পারে মডেল। এই বিষয়ে সচেতন করতে দিঘায় অ্যাসিড ফ্রি কাগজের ঠোঙায় ঘটিগরম পর্যটকদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রথম দায়িত্ব নিয়েছেন স্বরাজ ভট্টাচার্য। তিনি জানান, “খবরের কাগজের ঠোঙায় নানা সমস্যা। কাগজে থাকা কালি খাবারের সঙ্গে মিশে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তাছাড়া কেন্দ্র সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে। দিঘায় বহু পর্যটক বেড়াতে আসেন। ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদেরও পর্যটকদের প্রতি কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তাই খবর কাগজের বদলে অ্যাসিড ফ্রি কাগজ ব্যবহার করা শুরু করেছি।” ওই ফেরিওয়ালা মনে করেন সমস্ত ব্যবসায়ীরা অ্যাসিড ফ্রি কাগজ ব্যবহার করলে দিঘার ‘গ্রিন সিটি’র তকমা অর্জন করা সহজ হবে।
[এই তো অবস্থা! বাইক আরোহীর কাণ্ড দেখে হাতজোড় পুলিশের]
খবরের কাগজের কেজি প্রতি দাম ১২-১৪ টাকা। এক কেজি কাগজে অনেক ছোট পেপার মেলে। সেখানে অ্যাসিডমুক্ত কাগজের ৫০০ পিসের দাম ৫৮৫ টাকা। মানে এক এক ঠোঙা খাবারের জন্য বাড়তি এক টাকা গুনতে হচ্ছে স্বরাজবাবুকে। বাড়তি দামের জন্য ঘটিগরমে অবশ্য কোনও সেস বসাননি এই ফেরিওয়ালা। তিনি মনে করেন মানুষকে সচেতন করতে এটা করতেই হবে। খবরের কাগজের কালি থেকে খাদ্য দূষিত হতে পারে, যা থেকে মানুষের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকী এর থেকে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। দিঘাকে দূষণমুক্ত করতে এই আয়োজন বিন্দুতে সিন্ধু। এটা মানেন স্বরাজবাবু। একসময় তিনি প্রাইভেট গোয়েন্দার কাজ করতেন। পরিবারের সঙ্গে মন কষাকষির কারণে চলে আসেন রামনগরে। বছর দশেক ধরে তিনি ‘ঘটিগরম কাকু’ নামে পরিচিত হয়েছেন। এবার চানাচুর বিক্রির মধ্যে দিয়ে ফেরি করতে চান সচেতনতা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.