নন্দন দত্ত, সিউড়ি: মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প দেউচা-পাচামিতে (Deucha Pachami) খননকাজ শুরু হল বৃহস্পতিবার থেকে। এশিয়ার বৃহত্তম কয়লা খনি (Coal Mine) প্রকল্পে কয়লার স্তর গুনতে এল মেশিন। ১৪টি এলাকায় খননকাজ শুরু হয়েছে। কোথায় কোন স্তরে কয়লা পাওয়া যাবে, সেই সমীক্ষার কাজই করবে এই মেশিনটি। তবে এই খননকাজের বিরোধিতায় এদিনও জমি-জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভা নামে একটি আদিবাসী সংগঠন প্রস্তাবিত এলাকার বহু দূরে, বারোমেশিয়া এলাকায় আমরণ অনশনে বসেছে। যদিও তা এই বড় কাজে কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।
বৃহস্পতিবার সকালেই বীরভূমের (Birbhum) মহম্মদবাজার ব্লকের কেন্দ্রাপাহাড়ি এলাকায় পিডিসিএলের পক্ষ থেকে মেশিনটি পৌঁছয়। নারকেল ফাটিয়ে কাজ শুরু হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, দেওয়ানগঞ্জ, হরিণসিঙা, কেন্দ্রাপাহাড়ি-সহ আশেপাশের ১৪ টি এলাকায় খননের সমীক্ষা হবে। তাতেই বোঝা যাবে, মাটির নিচে কোন স্তরে এখানে কয়লা মিলবে। উত্তোলন শুরুর আগে এটি প্রাথমিক কাজ। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গতি পাওয়া দেউচা-পাচামি প্রকল্পের পথে বাধা কম ছিল না। দাবিদাওয়া, আদিবাসীদের প্রতিবাদের মতো একাধিক প্রতিকূল পরিস্থিতি পেরিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে অবশেষে প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি আশেপাশের বাসিন্দারা। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ”কেন্দ্রাপাহাড়ির মানুষদের সহযোগিতায় খননকাজ শুরু হল। এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তারপরই সমীক্ষা করে কয়লার জন্য মাইনিং প্ল্যান তৈরি করা হবে।”
এই সমীক্ষার কাজ শুরুকে কেন্দ্র করে বীরভূমে এর আগে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল দুবরাজপুরের লোবা অঞ্চলে। সেখানে একইভাবে সমীক্ষার কাজ করতে গেলে একটি মেশিন ৫ বছর ধরে আটকে রাখে বলে অভিযোগ ওঠে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে। এবার মহম্মদবাজারের এই এলাকায় সমীক্ষার কাজের জন্য অপেক্ষা করছিল জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে ওই এলাকায় জমি-জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভার নামে প্রস্তাবিত খনি এলাকার বাইরে আদিবাসীদের নিয়ে সংগঠন গড়ে তোলে বহিরাগত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তাদেরই প্রতিবাদের জেরে ২ মাস আগে সেখানে পাট্টা দিতে গিয়ে ফিরতে হয় জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে।
কিন্তু গত সপ্তাহে ওই এলাকার জমিদাতাদের মধ্যে ২৬০ জনকে জুনিয়র কনস্টেবলের নিয়োগপত্র দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। তাতেই পরিস্থিতি অনুকূল হয়। তবে তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই মেশিনের কাজ শুরু করা নিয়ে সন্দেহ ছিল। কারণ, গত বুধবার কেন্দ্রাপাহাড়িতে পানীয় জলের কল বসাতে গেলে সেখানে মহাসভার নামে আদিবাসীরা ও মেয়েরা ঝাঁটা, লাঠি নিয়ে কাজে বাধা দেয়। সন্ধে পর্যন্ত প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত হয়, সেখানে কাজ করতে গেলে জমি-জীবন-জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভার অনুমতি নিয়ে কাজ করতে হবে। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিনা বাধাতেই মেশিনটি কাজ শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.