Advertisement
Advertisement

অন্যদের আলোর খোঁজ দিয়ে জীবনের আঁধার ঘোচাচ্ছে এই পড়ুয়ারা

আলোক উৎসবে এ এক উত্তরণের কাহিনি।

Differently abled to perform Kali Puja in Contai
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 17, 2017 3:17 pm
  • Updated:October 17, 2017 3:17 pm  

রঞ্জন মহাপাত্রকাঁথি: নাম জোৎস্না। কিন্তু মেয়েটির বাস্তব একেবারেই অন্ধকার। দৃষ্টিহীন। সুমিতা বা রোহিত। এদেরও কেউ পটকার আওয়াজ শোনেনি, কেউ আবার নিজের কথাটা স্পষ্ট করে বলতে পারে না। তবে এত না পারার মধ্যেও ওরা আত্মনির্ভরতার পাঠ শিখছে। জানে কীভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হয়। আলোর উৎসবে ওদের হাতে তৈরি মোমবাতিই আলো এনে দেবে অনেকের ঘরে। কাঁথির এক প্রান্তে নিঃশব্দে জীবনের এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ছেলেমেয়েগুলো।

[সতীর পীঠ তমলুকে বর্গভীমা পূজিতা হন দেবী উগ্রতারা রূপে]

Advertisement

আলোর উৎসবে মেতে উঠতে তৈরি গোটা দেশ। দীপাবলিতে আলোর রোশনাই ছড়িয়ে দিতে মোমবাতি তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছে কাঁথির এই পড়ুয়ারা। দেশপ্রাণ ব্লকের ফরিদপুরের জনশিক্ষা প্রসার দপ্তর পরিচালিত দৃষ্টিহীন ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এখন বেশ ব্যস্ত। তাদের হাতে তৈরি হচ্ছে নানা রংয়ের মোমবাতি। কদিন পর এই বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের তৈরি মোমবাতির আলোর ছটায় বিচ্ছুরিত হবে চারদিক। জোৎস্না বেরা, সুমিতা বেরা, রঞ্জিৎ দাস-সহ বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী যেন আলোর কারিগর। এদের কেউ জন্মান্ধ, কেউ আবার চোখে কম দেখে, কারও কথা জড়িয়ে যায়, কেউ কম শোনে। সব বাধা পেরিয়ে এই খুদেরাই একের পর এক মোমবাতি নিপুণভাবে তৈরি করে চলেছে। দুই প্রশিক্ষক অনিরুদ্ধ প্রধান ও রাজীব দাসের প্রশিক্ষণ ও তত্বাবধানে তারা স্বনির্ভরতার পথ খুঁজছে।

[মুসলিম বধূর হাতেই দেবীর আরাধনা, সম্প্রীতির কালীপুজো হবিবপুরে]

মোমবাতি তৈরির ছাঁচে সুতো গলানো, মোম ঢালা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ ওরা করছে নিপুণ হাতে। এখানকার তৈরি মোমবাতির ব্র্যান্ডের নাম ‘বিবেকদ্যুতি’। বড় আকারের মোমবাতি ‘লোডশেডিং’ হিসেবে পরিচিত। দাবার গুটির আকারের মোমবাতির পাশাপাশি প্রদীপের আকারের ‘দিয়া’, ছোটমাপের মোমবাতি ‘মিকি মাউস’ এবারের চমক। এছাড়া রয়েছে রং-বেরংয়ের ছোট মোমবাতি ‘দীপাবলী’ও। এখানকার মোমবাতির বাজারে চাহিদা ভালোই। দীপাবলির অনেক আগে থেকেই ব্যবসায়ীদের থেকে অর্ডার চলে আসে। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ গৌতম শাসমল বলেন, বিদ্যালয়ের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৫০জনের বেশি ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। তার মধ্যে প্রায় ২৫জন মোমবাতি বানাচ্ছে। দৃষ্টিহীন কিংবা প্রতিবন্ধী হলেও ওদের উৎসাহে খামতি নেই। লেখাপড়ার পাশাপাশি অবসর সময়ে এই পড়ুয়ারা মোমবাতি ছাড়াও আগরবাতি, খেলনা তৈরি করে থাকে। শিক্ষকরা বলেন সক্ষমদের মাঝে ওদের অস্তিত্বকে চিনিয়ে দিতে পড়াশোনার সঙ্গে ওদের স্বাবলম্বী করে তোলাই তাদের লক্ষ্য। আর্থিক লাভের একাংশ পড়ুয়াদের দেওয়া হয়। আর এভাবেই দুনিয়ার আলো খুঁজে নেয় এই ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement