ছবি: প্রতীকী।
রাজা দাস, বালুরঘাট: বাড়ির কাছে উদ্ধার বিশেষভাবে সক্ষম যুবকের ঝুলন্ত দেহ। মৃতের নাম মনোজ ঘোষ। বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজছিলেন মনোজ। কিন্তু বিশেষভাবে সক্ষম হওয়ার কারণে একের পর এক ১৫ জন পাত্রী প্রত্যাখ্যান করেন তাঁকে। সেই অবসাদেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন যুবক। এমনই মনে করছেন পরিবারের সদস্যরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের বটুন গ্রাম পঞ্চায়েতের রামকৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা মনোজ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোটবেলা থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম ছিলেন তিনি। যুবকের ডান হাতে সমস্যা ছিল। তা নিয়েই নানা কাজ করতেন। পরিবারিক কৃষিকাজেও সাহায্য করতেন। সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। দু’বছর আগে মনোজের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখা শুরু হয়। সেই থেকেই নাকি সমস্যার সূত্রপাত।
মনোজের বাবা মনি ঘোষ বলেন, “বিয়ের জন্য প্রায় ১৫ জন পাত্রী দেখেছিল আমার ছেলে। প্রতিবার প্রত্যাখ্যাত হতে হচ্ছিল। আমার ছেলের একটি হাত খারাপ ছিল। সে কথা আমরা কখনও কারও কাছে গোপন করিনি। এছাড়া আমার ছেলের আর কোনও দোষ বা সমস্যা ছিল না। খাওয়া-পরারও কোনও অভাব ছিল না আমাদের পরিবারে। বিয়ে প্রত্যাখ্যান হওয়াটাই ছেলের মৃত্যুর কারণ বলে আমরা মনে করছি।”
শোনা গিয়েছে, নিজের বিছানায় কোলবালিশ রেখে লেপ চাপা দিয়ে গিয়েছিলেন মনোজ। যাতে কেউ বুঝতে না পারে যে তিনি বাড়িতে নেই। সকালে উঠে তাঁর কোনও সাড়া না পেয়ে খোঁজ শুরু হয়। বাড়ি থেকে একটু দূরেই এক গাছে মনোজের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, একটি ব্যাগে ধূপকাঠি, গীতা-সহ মৃতদেহ সৎকারে যা যা প্রয়োজন সমস্ত কিছু ভরে রেখেছিলেন মনোজ। মনে করা হচ্ছে, তাঁর সৎকারের সামগ্রীর জন্য যাতে কারও কোনও বাড়তি সমস্যা না হয়, সেই জন্যই এই কাজ করেন যুবক। মনোজের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার। এলাকায় শোকের আবহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.