ছবি: জয়ন্ত দাস
ধীমান রায়, কাটোয়া: জন্মের পর থেকেই তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। লাঠি ধরে হাঁটতে হয়। আর্থিক অবস্থাও বেশ খারাপ। কোনওরকমে পেট চলে। শরীর বা অর্থের দিক থেকে দুর্বল হলেও মনের দিক থেকে অনেক বেশি সবল পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার বেলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা অশোক কুমার ঘোষ(৫৫)। এমনিতেই পরের প্রয়োজনে এগিয়ে যাওয়ার অভ্যাস তো আছেই, এবার মরণোত্তর দেহদানের সিদ্ধান্ত নিলেন প্রতিবন্ধী ওই প্রৌঢ়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের আ্যনাটমি বিভাগে গিয়ে ইতিমধ্যেই অঙ্গীকারপত্র জমা দিয়েছেন তিনি। পদ্ধতি মেনে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাতার থানার ওসিকে দিয়ে কাছে সইও করিয়ে নিয়েছেন অঙ্গীকার পত্রে।
[বিবেকানন্দের মূর্তি বিকৃতির অভিযোগ, উত্তেজনা মহম্মদবাজারে]
বেলডাঙ্গা গ্রামে সাদামাটা মাটির বাড়িতে একাই থাকেন অশোক কুমার ঘোষ। বাবা দিবাকর ঘোষ অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। মা মায়াদেবীর মৃত্যু হয়েছে বছর দু’য়েক আগে। জানা গিয়েছে, অশোকবাবুর স্ত্রী ও এক ছেলে। তবে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে প্রায় ১৯ বছর আগে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন। তারপর থেকে অশোকবাবুর সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখেননি। পারিবারিক ১৬ কাঠা জমি রয়েছে। মূলত সেই জমির ওপরেই ভরসা করে দিন চলে তাঁর। কেন দেহদান করতে চান তিনি? অশোককুমার ঘোষ বলেন, ‘আমি নিজে শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাই শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কষ্টটা বুঝি। আমার দেহ যদি অপরের সাহায্যে লাগে তাহলে জানব আমার জীবন সার্থক।’
[রাজ্যে মোমো আতঙ্কে নয়া মোড়, অ্যাপের সন্ধান পেল সাইবার সেল]
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, অশোকবাবু এমনিতেই পরোপকারী মানুষ। গ্রামে কেউ বিপদে আপদে পড়লে তিনি পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তে আপ্লুত প্রতিবেশীরাও। ভাতারের বিডিও শুভ্র চট্টোপাধ্যায় এদিনই পুরো ঘটনা শোনেন। তিনি বলেন, ‘একজন শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী মানুষ যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন তা অনেকেরই শিক্ষণীয়। ওনাকে প্রনাম জানাতে ইচ্ছা করছে।’
[নাবালিকাকে ভয় দেখিয়ে লাগাতার ধর্ষণ, গ্রেপ্তার অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.