দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: যমে-মানুষে লড়াই শেষ। যুদ্ধ জিতে ফিরে এল পোলবা দুর্ঘটনায় আহত দিব্যাংশু ভকত। বিগত কয়েকদিনের টানাপোড়েন কাটিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলেই সুস্থ হয়ে ওঠে সে। হাসপাতাল ও পরিবারের তরফে সেকথা জানানো হয়। আজ, শুক্রবার সন্ধেবেলা নিজের বাড়ি ফেরে দিব্যাংশু। তাকে দেখতে বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা।
শুক্রবার কলকাতা থেকে মনোবিদ দেখিয়ে দিব্যাংশুকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন বাবা। গাড়ি থেকে নামার পরই নাতিকে আবেগে জড়িয়ে ধরেন ঠাকুমা প্রতিমা ভকত। দিব্যাংশুকে ক্যাডবেরি দিয়ে অভ্যর্থনা জানান তিনি। তারপর বাড়ি ঢোকার পর ঠাকুরের ফুল নাতির মাথায় ছোঁয়ান। কান্নাভেজা গলায় ঠাকুমা বলেন, “ঠাকুরের অশেষ কৃপা যে ও সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছে। আমাদের প্রার্থনা ঠাকুর শুনেছেন। ডাক্তারদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। ও যখন অসুস্থ ছিল, আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওর কষ্ট সহ্য করতে পারব না বলে দেখতে পারিনি। আজ ওকে সুস্থ দেখে আমি যে কতটা খুশী বলে বোঝাতে পারব না।” ছেলে বাড়ি ফিরলেও ঋষভের মৃত্যুর ছায়া পড়েছে দিব্যাংশুর বাবার মনে। তিনি জানিয়েছেন, “একই সঙ্গে যদি ঋষভ সুস্থ হয়ে ফিরত, ভাল লাগত। এখন দিব্যাংশুকে আর স্কুলে পাঠাব না। মনোবিদ দেখিয়েছি। তিনি বলেছেন, দিব্যাংশুর মনের উপর যেন একেবারেই চাপ না পড়ে। এখনও আতঙ্কিত হয়ে আছে ও। কম কথা বলছে।”
১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হুগলির পোলবায় ঘটেছিল ভয়ংকর পুলকার দুর্ঘটনা। নয়ানজুলিতে পুলকার উলটে গুরুতর জখম হয়েছিল ৪ খুদে। তাদের মধ্যে ২ খুদে ঋষভ সিং ও দিব্যাংশু ভকতের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। তাদের ফুসফুসে ঢুকে গিয়েছিল কাদাজল। তড়িঘড়ি তাদের ভরতি করা হয়েছিল এসএসকেএমে। সেখানেই চলছিল চিকিৎসা। চিকিৎসকদের আপ্রাণ চেষ্টা ব্যর্থ করে ২২ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ঋষভ। জীবনযুদ্ধে সহযোদ্ধা হার মানলেও লড়াই চালিয়ে যায় দিব্যাংশু। ঋষভের মৃত্যুর দিন সন্ধেবেলা থেকে চেতনা ফেরে তার। এরপরই ভেন্টিলেশন থেকে বের করা হয় দিব্যাংশুকে। কয়েকদিন আগেই চিকিৎসকরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, দ্রুতই ছেড়ে দেওয়া হবে ওই খুদেকে। আজ তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.