অর্ণব দাস, বারাসত: কামারহাটিতে আন্ত্রিকের (Diarrhea) প্রকোপ ক্রমশই ছড়াচ্ছে। আরও বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে খবর। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে বৃহস্পতিবার কামারহাটি (Kamarhati) এলাকায় পৌঁছন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। দপ্তরের জয়েন্ট ডিরেক্টর, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ ছয় সদস্যের দল গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। পাশাপাশি, তাঁরা সাগর দত্ত হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে দেখেন। এখনও পর্যন্ত হাসপাতালে ১৪০ জন চিকিৎসাধীন বলে খবর। তবে এই মুহূর্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে পুর প্রশাসনের সদস্যরা।
ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকায় তৎপর কামারহাটি পৌরসভা ও জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর (CMOH)। জল নাকি খাবার, কোথা থেকে ছড়াল এই সংক্রমণ – তা বোঝার জন্য নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছিল নাইসেডে (NICED)। পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বিমল সাহা জানিয়েছেন, জলের নমুনা সংগ্রহ করার পর যে প্রাথমিকভাবে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে জল থেকেই ছড়িয়েছে এই সংক্রমণ। তাই পানীয় জল সরবরাহে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পুরসভা জলের গাড়ি এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছে। এলাকাবাসীও জল ফুটিয়ে খাচ্ছেন। তবে তাঁদের অভিযোগ, এখনও যথেষ্ট সচেতনতা নেই এলাকায়। তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তাঁদের মধ্যে।
কামারহাটির পরিস্থিতি নিয়ে টানা পর্যবেক্ষণের পর আজ উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন কামারহাটি পৌরসভা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক (DM) সুমিত গুপ্তা, বারাকপুর মহকুমা শাসক অভ্র অধিকারী, স্বাস্থ্য আধিকারিক CMOH তাপস রায়, উপ CMOH সুপর্ণা চট্টোপাধ্যায়, কামারহাটি পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক গোপাল সাহা, পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বিমল সাহা-সহ জেলা ও পৌর আধিকারিকরা। বৈঠক শেষে জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা সাংবাদিকদের জানালেন, পানীয় জল থেকে যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, একটি বিশেষ প্রতিনিধি দল গঠন করে আক্রান্ত অঞ্চলের মানুষজনের বাড়িতে বাড়িতে যাবে এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম সহযোগিতা করবে। এখও পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১২৪ জন। মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। পরিস্থিতির উপর সম্পূর্ণ নজর রাখছেন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
জেলা CMOH তাপস রায় জানান, কামারহাটি পৌরসভা থেকে হ্যালোজেন ট্যাবলেট দেওয়া হবে। এলাকাবাসী তা জলে মিশিয়ে সেই জল পান করবেন। তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত কামারহাটি পৌরসভার ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ড পর্যন্ত ১৬৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে এখনও ১২৪ জন চিকিৎসাধীন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.