ফাইল ছবি
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: শুরুতেই বিভ্রাট। মরশুমের প্রথমে ইলিশ ধরতে বেরিয়েও ফিরে আসতে হল মৎস্যজীবীদের। সমুদ্রে উত্তাল ঢেউয়ের দাপটে একরকম বাধ্য হয়েই ইলিশশুন্য কয়েক হাজার ট্রলার ভিড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘাটে ঘাটে। ফিরতি পথে গভীর সমুদ্রে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কবলেও পড়তে হল একটি ট্রলারের ১৮ জন মৎস্যজীবীকে। যদিও আশার কথা, প্রাণরক্ষা হয়েছে সকলেরই।
সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠতেই গত ১৫ জুন ইলিশ শিকারের উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রা করেছিলেন মৎস্যজীবীরা। দু’মাসের প্রবল অর্থসংকট এবার কিছুটা হলেও মিটবে এই আশাতেই মুখে হাসি ফুটেছিল কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, রায়দিঘি, ফ্রেজারগঞ্জ, ডায়মন্ড হারবার ও বকখালির মৎস্যজীবী মহল্লায়। কিন্তু বিধি বাম! সমুদ্র এখন উত্তাল। প্রচণ্ড ঢেউয়ে আর স্রোতের ঘূর্ণিপাকে মাঝসমুদ্রে ট্রলার নোঙর করে জাল পাতাই মহা দুষ্কর হয়ে পড়েছিল মৎস্যজীবীদের। তাই একরকম শূন্য হাতেই একের পর এক ট্রলারকে ফিরতে হল বন্দরে। প্রায় সমস্ত ট্রলারই ফিরে এসেছে ঘাটগুলিতে। কিন্তু ফিরতে পারল না কাকদ্বীপের একটি ট্রলার। সমুদ্রের গভীরে সলিলসমাধি ঘটল এফ বি রাজনারায়ণ নামের ট্রলারটির। যদিও ডুবন্ত ট্রলারের ১৮ জন মৎস্যজীবীর জীবনরক্ষা করেছে বন্দরের পথে ফেরত আসা অন্য একটি ট্রলার এফ বি সপ্তর্ষিনারায়ণ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক বিজন মাইতি জানান, সমুদ্র উত্তাল থাকায় গত ফিরতিপথে বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রাজনারায়ণ ট্রলারটি। ট্রলারের মেশিনরুমে থাকা হোসপাইপ ফেটে যাওয়ায় ঘনিয়ে আসে বিপদ। হু-হু করে জল ঢুকতে শুরু করে ট্রলারে। কেঁদো দ্বীপের কাছে একসময় কাত হয়ে ডুবতে থাকে ট্রলারটি। ট্রলারের মাঝি ও মৎস্যজীবীদের আর্তচিৎকারে কাছাকাছি থাকা বন্দরে ফেরত আসা অন্য একটি ট্রলার সপ্তর্ষিনারায়ণের মৎস্যজীবীরা ডুবন্ত ট্রলারের ১৮ জন মৎস্যজীবীর উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। উদ্ধার হওয়া মৎস্যজীবীদের নিয়ে কাকদ্বীপ বন্দরে ভিড়েছে উদ্ধারকারী ট্রলারটি। উদ্ধার হওয়া সকল মৎস্যজীবীই সুস্থ রয়েছেন। উত্তাল সমুদ্র শান্ত হবে আগামী দুদিনেই, আশা মৎস্যজীবীদের। তার পরই তাঁরা ইলিশ শিকারে ফের পাড়ি দেবেন সমুদ্রযাত্রায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.