শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ভোটের পর আবার ভোট। উপনির্বাচনে কার্যত উৎসবের মেজাজে ভোট দিলেন ধূপগুড়ির বাসিন্দারা। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৭৪.৩৫ শতাংশ। বেশ কয়েকটি অভিযোগ ছাড়া সেই অর্থে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ বলে দাবি নির্বাচন দপ্তরের।
সদ্য শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। দু’মাসের ব্যবধানে ফের ভোট ধূপগুড়িতে। গত কয়েক দিন ধরে রাজনৈতিক উত্তাপ চড়ছিল। কিন্তু ভোট নির্বিঘ্নে সারতে আগেভাগেই প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলেছিল নির্বাচন কমিশন। ২৬০ টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র মুড়ে ফেলা হয় সিসিটিভি ক্যামেরায়। প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তাছাড়া বন্যপ্রাণীর হানাদারি আটকাটে ১০০ শতাংশ সফল বনকর্মীরা।
মঙ্গলবার ভোট শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে ধূপগুড়ি বৈরাতিগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৮২ নম্বর বুথের তিনটি ইভিএম খারাপ থাকার কারণে প্রায় ১ ঘণ্টা পর নতুন করে ইভিএম মেশিন এনে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। এদিন সাত সকালে ভোট দিয়ে দেন এই কেন্দ্রের যুযুধান তিন প্রার্থী তৃণমূলের ড: নির্মল চন্দ্র রায়, বিজেপির তাপসী রায়, বাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী ঈশ্বর চন্দ্র রায়। ভোট দিয়ে বেরিয়ে ওই কেন্দ্রের বাইরে থাকা পুলিশ কর্মীদের বুথের দু’শো মিটারের বাইরে বেরিয়ে যেতে বলেন বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায়। পুলিশের দাবি, নির্বাচন কমিশনের গাইড লাইন মেনে ভোটের লাইন ঠিক করছিলেন ওই পুলিশ কর্মী। যদিও বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ, তিনি ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন। এই নিয়ে পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীন ওয়াংদেন ভুটিয়ার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন তাপসী। পরে পুলিশের বিরুদ্ধে এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানায় বিজেপি।
অন্যদিকে, ভোট দিতে গিয়ে আলো কম থাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ করেন সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়। এদিন শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১৫/২০২ নম্বর বুথে ভোট দিতে যান মিতালী। ইভিএম-এর উপর থাকা আলোয় সমস্যা থাকায় এদিন টর্চ জ্বালিয়ে ভোট দেন। এবং বেরিয়ে এসে চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শিলিগুড়ির মেয়ের গৌতম দেব। বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে কালো চশমা চোখে লাগিয়ে ঘুরছে মিতালী। সেই কারণে আলোর বদলে সব কিছু কালো দেখছে।” যদিও পরে সেক্টর অফিসার গিয়ে আলো বদলে দেন। বিদ্যুৎ সংযোগে ত্রুটির কারণে এই ঘটনা বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে নির্বাচনী বিধিভঙ্গর অভিযোগে ধূপগুড়ি অস্থায়ী কার্যালয় থেকে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী ও ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মনকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগ, অশান্তি পাকাতে দলবল নিয়ে ধূপগুড়ি এসেছিলেন বিজেপি নেতারা। বাপি গোস্বামীর দাবি, নির্বাচন পরিচালনা করতে এসেছিলেন তাঁরা। এদিন ধূপগুড়ির পাশের বিধানসভা মাদারিহাটে বসে ভোট পরিচালনা করেন তৃণমূলের প্রচার কমিটির কো চেয়ারম্যান তথা মেয়ের গৌতম দেব। সঙ্গে ছিলেন রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ। গৌতম দেবের দাবি,মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। বিজেপিকে কোথাও দেখা যায়নি। রেকর্ড ভোটে তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায় এবং বাম কংগ্রেস জোট প্রার্থী ঈশ্বর চন্দ্র রায়ের। দু’জনেরই দাবি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.