Advertisement
Advertisement

মা লক্ষ্মীর কৃপায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে কুলটির ‘ভূতগ্রাম’-এ

বছরে একদিনই লক্ষ্মী মন্দিরে একত্রিত হন ঘরছাড়া গ্রামবাসীরা৷

Development starts in Benagram at Kulti
Published by: Tanujit Das
  • Posted:October 24, 2018 10:18 am
  • Updated:October 24, 2018 10:19 am  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: গ্রামের বুক চিরে চলে গিয়েছে ঝকঝকে ঢালাই রাস্তা। দেখা যাচ্ছে সারসার তারবিহীন বিদ্যুতের খুঁটি। গ্রামে ঢোকার মুখে তৈরি হয়েছে নতুন দোকান। গ্রামের গা ঘেঁষে শুরু হয়েছে প্লটিং। জমি কিনছেন বাইরের মানুষ। তৈরি হচ্ছে নতুন ঘর বাড়িও। লক্ষ্মীপুজোর প্রাক্কালে নয়া রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে একদা জনমানব শূন্য বেনাগ্রাম৷ লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে আবারও সেজে উঠছে ‘ভূতগ্রাম’ বলে খ্যাত কুলটির এই গ্রামটি। তবে বছরে আর মাত্র একদিন নয়,  এবার পাকাপাকি ভাবে অলক্ষ্মীর প্রভাব কাটিয়ে এবার শুরু হবে লক্ষ্মীর বাস। তেমনই ইঙ্গিত দিলেন গ্রামবাসীরাই৷ উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতেই নিজেদের ভিটেমাটিতে ফিরে আসতে শুরু করেছেন গ্রামের মানুষ৷

[সাঁতরাগাছি দুর্ঘটনায় রেলকে দুষলেন মুখ্যমন্ত্রী, ক্ষতিপূরণ ঘোষণা]

Advertisement

চিত্তরঞ্জন-নিয়ামতপুর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে বাঁ দিকে পড়ে জঙ্গলে ঘেরা একটি কাঁচা রাস্তা (এখন কংক্রিটের)। সেই পথ ধরে সামান্য এগোলেই এই বেনাগ্রাম। কয়েকদিন আগেও সেখানে ঢুকলে গা ছমছম করাটা রীতিমতো দস্তুর ছিল। তবে ছবিটা এমন ছিল না। একসময়ে প্রায় শ’খানেক পরিবারের বাস ছিল এই গ্রামে। পাশ দিয়েই গিয়েছে রেললাইন। গ্রাম ছেড়ে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছর দশেক আগে রেললাইন লাগোয়া এলাকায় দুষ্কৃতীদের উৎপাত বাড়তে থাকে। বাসিন্দারা জানান, রাতবিরেতে বিভিন্ন বাড়ির দরজায় ইঁট ছোড়া বা টোকা মারার আওয়াজ শোনা যেত। একদিন গ্রামেরই একটি পুকুর পাড়ে এক মহিলার দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। গ্রামে নানা উৎপাত দেখা দিলেও কখনও দুষ্কৃতীদের খোঁজ না মেলায় ভূত নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। একে-একে সব ক’টি পরিবারই গ্রাম ছাড়ে। রটে যায় ভূতের ভয়ে গাঁ উজার হয়েছে বেনাগ্রাম। এই গ্রামের পরিচয় হয়ে যায় ‘ভূতেরগ্রাম’ হিসেবে। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর রাতে গ্রামবাসীরা ফিরে আসেন গ্রামের লক্ষ্মী মন্দিরে।

[একসঙ্গে একাধিক ট্রেনের ঘোষণা, সাঁতরাগাছি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত ২ জন]

এদিনও দেখা গেল, পুজো উপলক্ষে গ্রামের রাস্তা নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে পুরনিগমের পক্ষ থেকে। সুপারভাইজার গৌতম সেনগুপ্ত বলেন, “গত দু’বছর ধরে পুজো উপলক্ষে সাফসুতরোর কাজ হচ্ছে পুরনিগমের আওতায়।” এবার সুধাকর মাজি ও পীতম্বর মাজির পরিবারের উপড়েই পড়েছে পুজোর যাবতীয় দায়দায়িত্বে। মাজি পরিবারের সদস্যরা বলেন, “রাতভর জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ আসবে। সারারাত পুজো হবে মা লক্ষ্মীর। ভোররাতে পাত পেড়ে প্রসাদ খাওয়া হবে। তাঁদের এই লক্ষ্মীপুজো হল দুর্গা পুজোর মতো।” সেই জনমানবশূন্য বেনাগ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। গ্রামের পেছনে খামার বাড়ির অংশে প্লটিং করছে প্রমোটাররা। গ্রামের মানুষ এখনও ফিরে না এলেও বাইরের মানুষজন সেই জমি কিনছেন। জমির দাম এখন অগ্নিমূল্য। এখানে কাঠা প্রতি দাম এখন ৩ লক্ষ টাকা করে। বাইরের লোকের হাত ধরেই গড়ে উঠছে বসতি। আর তাতেই ভরসা পাচ্ছেন  গ্রামবাসীরা। তাঁদের বদ্ধমূল ধারনা, মা লক্ষ্মীর কৃপাতেই সম্ভবপর হয়েছে সবকিছু৷ আবারও নতুন করে ‘শ্রী’ ফিরে পেয়েছে তাঁদের পছন্দের বেনাগ্রাম৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement