অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: বিজেপি কর্মীর রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। ঘাটালে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবের নির্দেশেই খড়গপুরের বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়েছে, বিস্ফোরক দাবি হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের। নিহতের মায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির তারকা প্রার্থী। খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, হিরণের বিস্ফোরক অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
খড়গপুর লোকাল থানার পপরআড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বারবাসি এলাকার বাসিন্দা শান্তনু ঘোড়াই সক্রিয় বিজেপি কর্মী ছিলেন। শনিবার সকালে বাড়ির অদূরে ধান জমিতে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। খড়গপুর লোকাল থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। শান্তনুকে খুন করা হয়েছে বলেই দাবি। রবিবার সকালে ওই নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে যান হিরণ চট্টোপাধ্যায়। মৃতের মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। হিরণের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন সদ্য সন্তানহারা মা। অভাব অভিযোগ তুলে ধরেন। জানান, তাঁর ছেলে তৃণমূল করেন বলেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা পাননি। ছেলের রহস্যমৃত্যুর অভিযোগ থানাতে জানালেও এফআইআর নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ। মৃতের মায়ের দাবি, তদন্তে রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা নেই। সিবিআই তদন্ত না করলে ময়নাতদন্ত করাতে দেবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।
শান্তনু ঘোড়াইয়ের ‘খুনে’ সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনা হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের। মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে যাবেন বলেও জানান তিনি। হিরণের দাবি, দেবের নির্দেশেই খুন করা হয়েছে শান্তনুকে। তাঁর খোঁচা, “দলদাস পুলিশের দলদাস ডাক্তার বলে দেবে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাই সিবিআই তদন্তই চাই। এই জেলার যত বড় বড় নেতা আছে সিবিআইয়ের জালে ধরব। এসপি থেকে আইসি, ওসি প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চাই।” বিজেপি কর্মী খুনের তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন হিরণ। তাঁর নিদান, “খড়গপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে হাতে লাঠি, ঝাঁটা, বটি, কাটারি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন।” যদিও পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয় শান্তনুর।
দেবের বিরুদ্ধে খুনের দায় চাপানো নিয়ে হিরণকে পালটা জবাব তৃণমূলের। কুণাল ঘোষ বলেন, “হিরণ দেবের নাম শুনলেই ভয়ংকরভাবে রেগে যায়। সম্ভবত পেশাগত সমস্যা রয়েছে। এগুলো কোনও কথা হল। যেকোনও একটা খুন হলেই তৃণমূলকে জড়ানো। প্রার্থীকে জড়ানো। কোনও কথা হল। রিল লাইফে হিরণ দেবকে পাল্লা দিতে পারেনি। রিয়েল লাইফেও পারেনি। এই খুনের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। হিরণকে বলব আদি বিজেপি, তৎকাল বিজেপি, সুস্থ বিজেপি আর সন্ধ্যার পর মাতাল বিজেপির তালিকা নিজের কাছে রাখবেন। প্রতিক্রিয়া দিতে সুবিধা হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.