সম্যক খান, মেদিনীপুর: জাতপাতের অজুহাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে হেনস্তার অভিযোগ উঠল। কাঠগড়ায় বিশ্ববিদ্য়ালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা কর্তারা। অভিযোগের জল গড়িয়েছে পুলিশ প্রশাসন পর্যন্ত। এমনকী, হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
বিদ্য়াসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vidyasagar University) ডেপুটি রেজিস্ট্রার অমল কুমার ভুঁইয়া। দিনের পর দিন জাত তুলে অপমান থেকে শুরু করে লাগাতার মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন তিনি। আর এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্তকিশোর নন্দীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এবার সরাসরি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। কোতয়ালি থানায় এফআইআর দায়েরের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক বিভিন্ন মহলেও অভিযোগ পাঠিয়েছেন তিনি। এমনকী, হাই কোর্টেও মামলা রুজু করেছেন বলে খবর। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক ডিএসপির নেতৃত্বে শুরু হয়ে গিয়েছে পুলিশি তদন্তও। অভিযুক্ত জয়ন্তকিশোর নন্দী অবশ্য বলেছেন, “তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে বিশেষ কিছু বলব না। তবে অভিযোগগুলি সর্বৈব মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।”
ডেপুটি রেজিস্ট্রর অমলবাবু বলেছেন, “গত দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁর উপর নানা ভাবে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে। পদে পদে তাঁকে অপমান করা হচ্ছে।” তিনি তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। প্রকাশ্যেই জাতিবিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে তাঁর প্রতি বিরূপ আচরণ করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রাক্তন উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেওয়ার পর থেকেই হেনস্তার মাত্রা দ্বিগুন করা হয়েছে। সম্প্রতি অমলবাবু নিজেও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। কর্মচারীদের দায়িত্ব বন্টন ইস্যুতে নিজের নোটশিটে দুই মহিলাকর্মীর সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সেই সময় মহিলা সহকর্মীদের অপমান করার অভিযোগও উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও অমলবাবু বলেছেন, তিনি কোনও মহিলা কর্মীদের নামে অসম্মানসূচক কিছু লেখেননি। তাঁর নোটশিটকে বিকৃত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়েও তদন্ত চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক স্তরে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর বেশ কিছুদিন ধরেই বনিবনা নেই জয়ন্তবাবু ও অমলবাবুর মধ্যে। জয়ন্তবাবু অনুগামীদের কথায়, সম্প্রতি আধিকারিক হিসেবে বেশ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল অমলবাবুকে। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। বিষয়টি গিয়েছিল বিশ্বিবিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকেও। সেই বৈঠকে অমলবাবুর আবেদনকে বাতিল করে দেওয়া হয় বলেই খবর। যদিও অমলবাবু বলেছেন, তাঁর দায়িত্ব নিতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তাঁর মতো একজন সিনিয়র আধিকারিককে কোনও সম্মান দেওয়া হয়নি। কোনও কাজ নিয়ে রেজিস্ট্রারের চেম্বারে ঢুকলে তিনি চেয়ারে বসতে পর্যন্ত বলেন না। উলটে জাতিবিদ্বেষী মন্তব্য থেকে শুরু করে নানা ছুতোয় অপমান করতে থাকেন। দিনের পর দিন বিষয়টি সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই ন্যায় বিচারের আশায় শেষমেশ পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.