শুভঙ্কর বসু: এটা যদি ট্রেলার হয়, তাহলে গোটা ছবিটা কেমন হবে? কীভাবে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনবেন? কোথাও কোনও চাপ থাকলে বলুন। কমিশন ব্যবস্থা নেবে। ভয় নেই, সব গোপন থাকবে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনগুলিকে বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সে এসব প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার পাশাপাশি এভাবেই পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন উপ নির্বাচন কমিশনার কমিশনার (Deputy election commissioner) সুদীপ জৈন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, হাত খুলে কাজ করুন। কমিশন পাশে আছে।
নির্বাচনের মুখে রাজ্যে একাধিক জায়গায় হিংসা-অশান্তির ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিশেষত মুর্শিদাবাদে রাজ্যের মন্ত্রীর উপর বোমা হামলার ঘটনায় কার্যত কমিশনের ঘুম উড়েছে। ভোটের তারিখ ঘোষণার আগে যে কোনও উপায়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে চাইছে কমিশন। সেই সূত্রেই এদিন প্রত্যেক জেলা প্রশাসনকে আশ্বস্ত করে উপ নির্বাচন কমিশনার বার্তা দিয়েছেন, যে কোনও মূল্যে এবার পশ্চিমবঙ্গে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতেই হবে। এটা সকলের কাছে চ্যালেঞ্জ।
সাম্প্রতিক সময়ে হিংসার ও উত্তেজনার ঘটনার পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার বুথ অতি স্পর্শকাতর হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। তামিলনাড়ু, কেরল ও অসমে এই পরিস্থিতি নেই। ফলে এখন থেকেই পরিস্থিতিতে লাগাম পরানো না গেলে তা উত্তরোত্তর আরও বাড়বে বলে জেলা কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন সুদীপ জৈন। আর সেই কাজ করতে গিয়ে জেলা প্রশাসনের কোনও আধিকারিক কোথাও কোনও রাজনৈতিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন কি না, তা কমিশনকে তিনি জানাতে বলেছেন। সূত্রের খবর, তেমনটা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি গোটা ব্যাপারটা গোপন রাখা হবে বলেও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের এদিন আশ্বস্ত করেছেন উপ নির্বাচন কমিশনার। রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, “আধা সামরিক বাহিনী ব্যবহারের উপর জোর দিতে বলেছেন উপ নির্বাচন কমিশনার। চিহ্নিত অতি স্পর্শকাতর ও স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে নিয়মিত কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল দিলে পরিস্থিতি আয়ত্তে থাকবে।” পাশাপাশি, সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আগামী সপ্তাহেই রাজ্যে আসতে পারেন বলেও এদিন ভিডিও কনফারেন্সে ইঙ্গিত দিয়েছেন সুদীপ জৈন।
এদিন প্রতিটি জেলার কাছ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে যাচাই করেছেন উপ নির্বাচন কমিশনার। কয়েকটি জেলায় বুথ আয়োজন সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে সমস্যা থাকলেও রাজ্যের সার্বিক ভোট প্রস্তুতিতে মোটের উপর খুশি কমিশন। কিন্তু গলার কাঁটা ওই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। যে কোনও উপায়ে তা আয়ত্তে আনতে চাইছে কমিশন। এদিনই রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে মোট ১২৫ কোম্পানি বাহিনী। তাদের কিভাবে ব্যবহার করতে হবে তার একটি রূপরেখাও জেলা প্রশাসনগুলিকে উপ নির্বাচন কমিশনার বেঁধে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও ভীত-সন্ত্রস্ত ভোটারদের মনোবল বৃদ্ধি করতে জেলা প্রশাসনগুলিকে আরও বেশি করে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন সুদীপ জৈন। ব্লক, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ওয়ার্ড স্তরে সেইসব ভোটারদের বাড়ি গিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের নম্বর পৌঁছে দিয়ে আসতে বলেছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.