Advertisement
Advertisement

টাকা জমার সব তথ্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঘুরে যাবে আয়কর দফতরের হাতে

আজ খুলছে এটিএম, কিন্তু টাকা মিলবে কতক্ষণ?

Deposits above Rs 2.5 lakh to face tax, penalty on mismatch
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 11, 2016 9:57 am
  • Updated:November 11, 2016 9:57 am  

তরুণকান্তি দাস: হাতে হাজার নোটের লাখ টাকার বান্ডিল৷ সমস্ত ফর্ম পূরণ করে কাউন্টারে জমা দেওয়ার সময় ব্যাঙ্ক কর্মী জানালেন, একটা কাগজে নোটের নাম্বারগুলি নিখে দিন৷ পিছনে তখন শতাধিক গ্রাহক৷ লাইন থেকে বেরিয়ে গেলে ফের ঘণ্টাকয়েক কাবার৷ তবে? কোনও ব্যাঙ্কে এই হ্যাপা নেই৷ যাও৷ ডিপোজিট ফর্ম ভরো৷ টাকা দাও৷ তা হলে?

বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টাকা জমা করাতে গিয়ে কর্মচারী শুনলেন, তাঁর স্বাক্ষরিত পরিচয়পত্র লাগবে৷ কিন্তু অ্যাকাউন্টে তো প্যান নম্বর দেওয়া আছে? উঁহু৷ কাজ হবে না, এখন অন্যের আমানতে টাকা জমার ক্ষেত্রে যিনি দিতে এসেছেন তাঁর সুলুক-সন্ধান রাখবে ব্যাঙ্ক৷ কেন না যদি পরে তিনি অস্বীকার করেন তবে গ্রাহক তো ফেঁসে যাবেন আয়করের চক্করে৷ ব্যস৷ ফের ছুট নিজের পরিচয়পত্রের জেরক্স কপি আনতে৷

Advertisement

(টাকা লেনদেনে চরম ভোগান্তি, ক্ষুব্ধ আম আদমি)

বৃহস্পতিবার দিনভর এই ধরনের বিভ্রান্তি, নানা গুজব-রটনা ও ঘটনার সাক্ষী রইল রাজ্য৷ আসলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঠিক কী নির্দেশিকা জারি করেছে তা নিয়েই যত কাণ্ড৷ কোথাও ব্যাঙ্ক কর্মীদের নিজস্ব সুবিধাজনক মনগড়া নিয়মের ফাঁদে কাঁদতে হল গ্রাহকদের৷ কোনও কোনও জায়গায় আবার স্রেফ অজ্ঞতার মাশুল দিতে হল দিনটা নষ্ট করে৷ এবং আজ শুক্রবার থেকে আরও এক বিভ্রাট অপেক্ষা করছে গ্রাহকদের জন্য৷ এটিএম খুললেও কতক্ষন সেখানে টাকা থাকবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে৷ সবচেয়ে বড় কথা, যাঁদের এটিএম কার্ড ব্লক রয়ে গিয়েছে তাঁদের চরম ভোগান্তির আশঙ্কা আছে৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন্ ব্যাঙ্ক কর্মীদের সংগঠন সূত্রে খবর, নোট লেনদেন ও জমার নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা আছে, নোটের নম্বর উল্লেখ করার দরকার নেই৷ যেহেতু কাজের চাপ বড্ড বেশি, গাদাগুচ্ছের টাকা জমা পড়ছে, আসল-নকল খতিয়ে দেখার সময় মিলছে না তাই বহু ব্যাঙ্ক কর্মী গ্রাহকের থেকে একটা সাদা কাগজে নোটের নম্বরগুলি লিখিয়ে সই করিয়ে নিচ্ছেন৷ এতে পরবর্তী সময়ে জাল নোট ধরা পড়লে ওই ব্যক্তিকে ডেকে পাঠানো যাবে৷ না হলে নিজের পকেট থেকেই গুনে দিতে হবে টাকা৷ নিজের আমানত থাকলে সেখানে যত খুশি টাকা জমা দেওয়া যাবে, স্রেফ গ্রাহকের সই মিলিয়ে সেটি নেবে ব্যাঙ্ক৷ আড়াই লাখ টাকার বেশি জমা দিলে তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কি না দেখা হবে৷ অন্যের আমানতে জমা দিতে গেলে লাগবে পরিচয়পত্র৷ প্যান না থাকলে ৫০ হাজারের নিচে যে কোনও আমানত দিতে সমস্যা হবে না৷

তা-ই যদি হয় তো এত জটিলতার জালে কেন দিনভর ভোগান্তি হল গ্রাহকদের? সবার অভিযোগ, ব্যাঙ্ককর্মীরাই ডিপোজিট ফর্ম পাচার করছেন৷ পরিচিত, বন্ধু-বান্ধবকে, অথবা কখনও অর্থের বিনিময়ে তা দেওয়া হচ্ছে৷ এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দুই কর্মী সংগঠন বেফি এবং এআইবিইও জানিয়ে দিয়েছে, সাধারণ জমার ফর্ম ছাড়া বিশেষ কোনও ফর্ম তো লাগছে না৷ তাই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন৷ কিন্তু এই যে হঠাত্‍ কয়েকগুণ ব্যাঙ্ক লেনদেন বেড়ে গেল এর হদিশ ঠিক কীভাবে পাবে আয়কর দফতর৷ সোজা অঙ্ক৷ বৃহস্পতিবার থেকে আমার আপনার জমা টাকার রোজকার হিসাব সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক পাঠিয়ে দেবে তাদের আঞ্চলিক কার্যালয়ে৷ পরে তা পৌঁছবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে৷ খতিয়ে দেখবে আয়কর দফতরের বিশেষ টিম৷ সেই মতো ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিস আসবে আপনার কাছে৷ উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পারলে জরিমানা৷ এবং জেলের ঘানিও টানতে হতে পারে৷

(১০০ টাকা আছে? খুচরোর খোঁজে হন্যে শহরবাসী)

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement