স্টাফ রিপোর্টার: বর্ষা আসতে না আসতেই উত্তর ২৪ পরগনায় ফের ছোবল বসাল ডেঙ্গু। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া হাসপাতালে মৃত্যু হল দুই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর। মৃতদের নাম পূজা দাস দেবনাথ (২১) ও অচিন্ত্য সাহা (৫৮)।
গত বুধবার প্রবল জ্বর নিয়ে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন হাটথুবা এলাকার বাসিন্দা পূজা দাস দেবনাথ। ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। মৃতের পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। বুধবার সকালেও পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কিন্তু, বেলার দিকে হাসপাতালের তরফে তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এই খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁর পরিবারের লোকেরা। তাঁদের অভিযোগ, চিকিৎসার গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূর।
যদিও হাবড়া হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ জানান, “পূজা দাস দেবনাথের রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে সবার সঙ্গে কথাও বলেছেন। কিন্তু, তারপর আচমকা ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি মারা গিয়েছেন। আমাদের তরফে সবরকম চেষ্টা করা হয়েছিল।”
অন্যদিকে তার আগে বৃহস্পতিবার ভোরেই মৃত্যু হয় অশোকনগরের গুমার বাসিন্দা অচিন্ত্য সাহার। হাবড়া হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রথমে ঈশ্বরীগাছা হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভরতি হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। সেখানে রক্ত পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাবড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় অচিন্ত্যবাবুকে। বৃহস্পতিবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
২০১৭ সালে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া ও দেগঙ্গা-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে ভয়াবহ আকার নিয়েছিল ডেঙ্গু। অসংখ্য মানুষ বেঘোরে প্রাণ হারিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু, এবছর ফের বর্ষা আসার আগেই ডেঙ্গুতে দু’জনের মৃত্যু হওয়ায় ব্যাপক আতঙ্ক দানা বাঁধছে এলাকায়। ফের দু’বছর আগের সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি ফিরে আসছে বলে আতঙ্কে ভুগছেন এলাকাবাসী। ইতিমধ্যেই শুধু হাবড়া শহরে কয়েকজনের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। ১৫ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভরতিও আছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, লোকসভা ভোট ও পুরসভায় প্রশাসক থাকায় গত কয়েকমাস ডেঙ্গু নিধনে কোনও কাজ হয়নি। সেই কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যদিও সেকথা মানতে চাননি পুরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা মহকুমাশাসক তাপস বিশ্বাস। তাঁর দাবি, সচেতনা বৃদ্ধির জন্য মাইক প্রচার থেকে মেডিক্যাল ক্যাম্প সবই করা হচ্ছে। নালা পরিষ্কারের পাশাপাশি চলছে মশা মারার কাজও। তবে কিছু জায়গায় প্লাস্টিক ফেলে রাখার জন্য নিকাশি ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জল জমে জন্ম নিচ্ছে মশার লার্ভা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.