Advertisement
Advertisement

Breaking News

যাবতীয় আর্থিক লেনদেনের হিসাব রাখছে ‘নোটেক্স’

যাঁরা ভাবছিলেন কালো টাকা অনেকটাই ম্যানেজ করা গেল, তাঁদের ভুল প্রমাণিত করতে তৈরি ‘নোটেক্স’৷

demonetization issue: Notex software keeps eye on everyone
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 18, 2016 8:58 am
  • Updated:November 18, 2016 10:00 am  

তরুণকান্তি দাস: একটা সফটওয়্যার৷ একটা কোড৷ সেখানে বাঁধা সবার লেনদেনের টিকি৷ কত নগদ ওঠালেন? কতগুলি পাঁচশো-হাজারের পরিবর্তে নিলেন একশো বা পঞ্চাশের নোট? এক ক্লিকেই সব তথ্য হাট হয়ে খুলে যাবে আয়কর দফতরের কাছে৷ কোথাও অসংগতি দেখলেই নোটিস দোরগোড়ায়৷

নোটেক্স৷ নোট এবং এক্সচেঞ্জ দুই শব্দের সন্ধি বলাই যায়৷ একদম নতুন এই সফটওয়্যার প্রতিটি ব্যাঙ্ক এবং সাব পোস্ট অফিসের কম্পিউটারে৷ এখন নোটেক্সের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছে সব কিছু৷ প্রতিটি গ্রাহকের গত ক’দিনের অর্থনৈতিক লেনদেন নথিবদ্ধ রাখার জন্য নয়া প্রযুক্তির দ্বারস্থ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক৷ ব্যাঙ্কিং শিল্পে যুক্তরা বলছেন, নয়া কৌশলে সফল কেন্দ্র৷ এমনটা আগে কখনও হয়নি যে!

Advertisement

প্রথমে চার হাজার টাকার নগদ নোট পরিবর্তনের নিয়ম চালু করে পরে তা কমিয়ে দুই হাজারে নামিয়ে এনেছে অর্থমন্ত্রক৷ দেখা গিয়েছে, একজন একাধিকবার লাইনে দাঁড়িয়ে পাঁচশো-হাজারের নোট বদলে নিয়ে গিয়েছেন৷ অনেক ক্ষেত্রে বাড়ির পরিচারক, পরিচারিকা, গাড়ির চালক এবং সংস্থার কর্মীদের পাঠিয়ে টাকা বদলানো হয়েছে৷ বড় ব্যবসায়ীরা নিজের কাছে থাকা হিসাব বহির্ভূত টাকা ভাঙিয়ে নিতে ভাড়ার লোককে মাঠে নামিয়েছেন৷ অনেকে আবার বিভিন্ন ঠিকানায় থাকা নিজের একাধিক পরিচয়পত্র দাখিল করে বারবার নোট বদল করে নিয়েছেন৷ হাতে কালি-পর্ব চালু হওয়ায় তা এক ধাক্কায় অনেক কমেছে৷ তবে যা হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে৷ অনেকে ভাবছেন, কালো টাকার অনেকটাই ম্যানেজ করে নেওয়া গেল৷ কিন্তু বাস্তব বলছে, তা নয়৷ বরং সব তথ্যই বন্দি রয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের কাছে৷ তার লিঙ্ক আঞ্চলিক কার্যালয়, রিজার্ভ ব্যাঙ্কে তো বটেই আয়কর দফতরের কাছেও৷ যা মনিটরিং হচ্ছে নিয়মিত৷ সৌজন্যে নোটেক্স৷

কীভাবে কাজ করছে এই সফটওয়্যার? বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্মী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচশো-হাজার টাকার নোট যাঁরা বদলাতে যাচ্ছেন তাঁরা যে পরিচয়পত্র জমা দিচ্ছেন সেই অনুযায়ী গ্রাহকের নামটুকু এন্ট্রি করলেই কম্পিউটারে লোড করা নোটেক্স তার দরজা খুলে দেবে৷ বলে দেবে ব্যাঙ্ককর্মীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটি কবে কখন কত টাকা জমা দিয়েছেন৷ তার কতগুলি অ্যাকাউন্ট কোথায়, কোথায় রয়েছে৷ প্যান কার্ড নম্বর কত৷ অর্থাত্‍ এই ডামাডোলের বাজারে সবমিলিয়ে ঠিক কত নগদ তিনি বড় নোটের পরিবর্তে তুলে নিয়ে গিয়েছেন৷ আয়কর দফতরের এক কর্তা বলেন, যদি দেখা যায় মোটামুটি পঞ্চাশ হাজার ছুঁয়ে গিয়েছে কারও এই পাঁচশো-হাজার নোট বাতিলের অঙ্ক তা হলে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হতে পারে৷ এবং প্রাথমিকভাবে আয়কর দফতরের হাতে তথ্য এসেছে, দু’লাখ পর্যন্ত নগদ নোট-বদল হয়েছে এমন নজিরও রয়েছে৷ তবে কিছু ব্যাঙ্কে এখনও এই সফটওয়্যার চালু করা যায়নি বলে খবর৷

সদ্য চালু নিয়ম মতো একবার বাতিল নোট বদলে নিলে আর আপাতত লাইনে দাঁড়ানো যাবে না৷ বাকি টাকা জমা দিতে হবে নিজের অ্যাকাউন্টে৷ এতে স্বচ্ছতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠার কথা নয়৷ কিন্তু প্রশ্ন একটা উঠেছিল৷ সেটা হল, যে বা যাঁরা গত ৯ নভেম্বর থেকে টাকা বদলাচ্ছেন তাঁদের তথ্য তো থাকছে না৷ তা হলে ঠিক কত টাকা একজন নিয়ে বেরিয়ে গেলেন? সেটা যে পুরোপুরি সাদা তা তো নাও হতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে? তাঁদের ধরার উপায় কী? বিষয়টি জানা গিয়েছে কয়েকদিন পর৷ এজন্য যে আটঘাট বেঁধে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক নেমেছিল তা-ও এখন স্পষ্ট৷ সেই ফাঁদের নাম ‘নোটেক্স’৷ যার উপর ভর দিয়ে লাটাইয়ের ছেড়ে রাখা সুতো গুটিয়ে আনা হবে কিছুদিন পরে৷ এবং এটাও পরিস্কার, নোটেক্সের টানে ভো কাট্টা হওয়ার অপেক্ষায় বহু ঘুড়ি৷ যারা উড়ছিল কালো টাকা সাদা করিয়ে ঘরে তোলার আনন্দে৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement