সন্দেশখালি যাওয়ার পথে দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে 'বাধা' পুলিশের। নিজস্ব চিত্র
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমকে সন্দেশখালি যেতে বাধা। ধামাখালিতে পুলিশের সঙ্গে প্রবল বচসা হয় ওই টিমের প্রতিনিধিদের। বেশ কিছুক্ষণ তর্কাতর্কির পর পুলিশকে মুচলেকা লিখে সন্দেশখালির পথে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের ৬ সদস্য।
ওই ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন বিচারপতি নারসিমা রেড্ডি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যুগ্ম রেজিস্ট্রার রাজপাল সিং, ওপি ব্যাস, জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের কনসালট্যান্ট ভাবনা বাজাজ এবং বর্ষীয়ান সাংবাদিক সঞ্জীব নায়ক। সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া, নতুনপাড়া ও নস্করপাড়ার রাসমন্দিরে যান ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। স্থানীয় মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। শোনেন অভাব অভিযোগ। থমথমে সন্দেশখালিতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, বলেই অভিযোগ দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রতিনিধি দলের।
সন্দেশখালির মহিলাদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য ভাবনা বাজাজ বলেন, “২৮-৭০ বছর বয়সি অত্যন্ত কুড়িজন মহিলার সঙ্গে কথা বলেছি। একজন ৭০ বছর বয়সি বৃদ্ধাকে বাড়ির এককোণে বসে মেয়ে এবং পুত্রবধূর জন্য আতঙ্কে কাঁদতে দেখেছি। ক্যামেরার সামনে আসতে না চাওয়া এক তরুণীর সঙ্গে দেখা করেছি। ওই নির্যাতিতা জানিয়েছেন প্রতি রাতে চার বছর বয়সি কন্যাসন্তানকে নিয়ে লুকিয়ে থাকেন। তাঁর স্বামী আপাতত গ্রামছাড়া। বেশিরভাগ মহিলাই শিবু হাজরার নাম উল্লেখ করেছেন। এক মহিলার অভিযোগ, তৃণমূল নেতাকে বিনোদন জোগাতে রাতভর দলীয় কার্যালয়ে থাকতে হয় তাঁকে। তিনি ধর্ষণ কিংবা যৌন হেনস্তা শব্দ উল্লেখ করেননি। তবে তাঁর শরীরের ক্ষতচিহ্ন দেখলে বোঝা যায় উনি যা বলছেন তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু ঘটেছে। মহিলা থানাতেও অভিযোগ জানাননি। কারণ, পুলিশ তাঁদের অভিযোগে শোনে না।”
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতিনিধি দলের দাবি, পুলিশের তরফে সেদিন সকালে তাঁদের একটি চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় এখনও ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। তাই আইন মোতাবেক তাঁদের গ্রামে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব নয়। চিঠি হাতে পাওয়ার পর ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের সদস্যরা স্পষ্ট জানান, তাঁরা গ্রামে যাবেন। যে এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে সেখানে তাঁরা দল বেঁধে যাবেন না। তাঁদের মধ্যে শুধুমাত্র ২ জন ওই গ্রামে ঢুকবেন।
তার পরেও সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। সন্দেশখালি থেকে প্রায় ৫২ কিলোমিটার দূরে ভোজেরহাটেই তাঁদের গাড়িকে আটকে দেয় কলকাতা পুলিশ। গ্রেপ্তারও করা হয়। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তাঁরা। ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে সন্দেশখালির মাঝেরপাড়া, নতুনপাড়া ও নস্করপাড়ার রাসমন্দিরে যাওয়ার অনুমতি দেয় হাই কোর্ট। থানায় মুচলেকা জমা দিয়ে যেতে হবে বলেই জানানো হয়। সেই মতো রবিবার সকালে সন্দেশখালি যান ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। যদিও পথেই বাধা পান তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.