হাসপাতালে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবার-পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বিষাক্ত’ স্যালাইন প্রয়োগের কারণেই মৃত্যু হয়েছে তরুণী মায়ের? আরও চারজনের শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগীমৃত্যু ঘিরে ফের প্রশ্ন উঠেছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে ওই হাসপাতালে তদন্তকারী দল পাঠাচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমও বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন। আরও এককদম এগিয়ে রাজ্যের জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস-এর তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই বিষয়ে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ায় সরকারি হাসপাতালে শুক্রবার সকালে বছর ২১ বয়সি মামনি রুই দাসের মৃত্যু হয়। আরও চারজন প্রসূতি আইসিইউতে ভর্তি। এই ঘটনায় দিনভর উত্তেজনা দেখা যায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মৃতের পরিবারের পাশাপাশি অন্যান্য সাধারণ মানুষও বিক্ষোভ দেখান। ঘটনার আঁচ গিয়ে পড়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরেও। ‘বিষাক্ত’ স্যালাইন দেওয়ার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ শুধু নয়, ব্ল্যাক লিস্টেড কোম্পানির থেকে সেটি নেওয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের থেকে উঠেছে। এদিন বেলাতেই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের থেকে মেদিনীপুর হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ঘটনার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ জয়ন্ত রাউত জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে এদিন নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আগামিকাল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের থেকে ১৩ সদস্যের এক তদন্তকারী দলও সেখানে যাচ্ছেন। ওই স্যালাইন কি সত্যিই বিষাক্ত? পরীক্ষার পরেই এই বিষয়টি বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের তরফে ১১ সদস্যের একটি তদন্তকারী দলও তৈরি করা হয়েছে।
গুণমান ঠিক না থাকার কারণে শিলিগুড়ির পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসকে কালো তালিকভুক্ত করেছিল কর্নাটক সরকার। কর্নাটক সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের অভিযোগ, নিকৃষ্ট মানের রিঙ্গার ল্যাকটেট সরবরাহ করা হয়েছিল। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনাতেও ওই সংস্থার তৈরি রিঙ্গার ল্যাকটেটকেই দায়ী করল স্বাস্থ্য ভবন। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ড্রাগ কন্ট্রোল বিশেষজ্ঞ দল মালদহ মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে ল্যাকটেট পরীক্ষা করে রীতিমতো বিস্মিত। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, শিলিগুড়ির কালো তালিকাভুক্ত ফার্মাসিউটিক্যাল থেকেই রিঙ্গার ল্যাকটেট সরবরাহ করা হয়েছিল।
হাসপাতালের আইসিইউতে ওই চার প্রসূতির শারীরিক অবস্থা নিয়েও দুশ্চিন্তা রয়েছে। তাঁদের শরীরের দিকে সর্বক্ষণ নজর রাখা হচ্ছে। সেই কথাও হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.