শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: স্বপ্ন ছিল একসঙ্গে ঘর করার। কিন্তু বুধবার সকালে সেই স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে। ট্রাকের চাকায় পিষে প্রাণ হারিয়েছেন প্রেমিক। দুঃসংবাদ শুনে নিজেকে সামলাতে পারেনি কিশোরী। অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা স্কুলছাত্রীর। বুধবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কান্নার শব্দে ভারী শিলিগুড়ির হাকিমপাড়া।
এদিন সকালে শিলিগুড়ি সংলগ্ন আমাইদিঘি এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন মহম্মদ ফিরোজ এবং তাঁর দিদি রুবি খাতুন৷ সেই সময় বেপরোয়া গতিতে আসা একটি ট্রাক পিষে দিয়ে যায় দু’জনকেই৷ ঘাতক ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ভাই এবং দিদির৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই দুঃসংবাদ পৌঁছায় হাকিমপাড়ায়৷ সেখানেই থাকত দুর্ঘটনায় নিহত ওই যুবকের প্রেমিকা নাজমা খাতুন৷ ওই কিশোরী শিলিগুড়ির হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী৷ আর ফিরোজ একটি ব্যাগের দোকানে কাজ করত। কয়েকবছর ধরেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল দু’জনের৷ নাজমা এবং ফিরোজ দু’জনের পরিজনেরাই জানতেন সম্পর্কের কথা৷ তাদের সম্পর্কে কারও কোনও আপত্তিও ছিল না৷
আচমকা ফিরোজের মৃত্যুর খবর মেনে নিতে পারেনি নাজমা৷ তাই এ খবর শোনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে সে৷ সকলের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয়৷ দুপুরে যখন সবাই কাজে ব্যস্ত সেই সুযোগে প্রেমিককে হারানোর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নাজমা৷ দুপুরে খাওয়ার জন্য কিশোরীকে ডাকতে যান মা৷ দরজায় ধাক্কা দিয়েও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি তার৷ নাজমার মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশী-পরিজনেরা জড়ো হয়ে যান৷ বাধ্য হয়ে ভেঙে ফেলা হয় ঘরের দরজা৷ ভিতরে ঢুকে অবাক হয়ে যান তাঁরা৷ দেখেন ঘরের ভিতর ঝুলছে নাজমার নিথর দেহ৷
তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় নিউ জলপাইগুড়ি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। এই ঘটনার পর থেকেই শোকের আবহ গোটা এলাকায়। চোখে জল কিশোরী এবং তার প্রেমিকের পরিজনদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.