অর্ণব দাস, বারাসত: স্কুল ছাত্রীকে ‘সমকামী’ বলে দাগিয়ে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠল সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। জোর করে বান্ধবীর সঙ্গে ‘সমকামী’ সম্পর্ক মানতে বাধ্য করা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। কিশোরী তাদের কথামতো কাজ না করায় হস্টেলেই বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থানার হাড়োয়া রেলগেট সংলগ্ন হাদিপুরের এক বেসরকারি আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পরিবার সূত্র জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ফলতা থানায় এলাকার বাসিন্দা ছাত্রীর মা-বাবা চলতি মাসের ১ তারিখ হাদিপুরের ওই আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁর মেয়েকে ‘সমকামী’ বলে কটুক্তি করছিল সহপাঠীরা। প্রতিবাদ করায় ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলে ছাত্রীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এই আতঙ্কে পড়ুয়া আর হস্টেলে থাকতে চায় না বলেও মা-বাবাকে জানায়। এর পরই ওই আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষিকাকে বিষয়টি বলতে গেলে তিনি আমল দিতে চাননি বলেও দাবি পরিবারের।
পরের দিনই গোটা বিষয়ে দেগঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ‘আক্রান্ত’ ছাত্রীর পরিবার। কিন্তু তার পরও পুলিশের তরফে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় ফের পরিবারের তরফের দেগঙ্গা থানায় লিখিত জানানো হয়। আক্রান্ত ছাত্রী জানিয়েছে, “বান্ধবীর সঙ্গে আমার সমকামী সম্পর্ক স্বীকার করতে বলেছিল সহপাঠীরা। স্বীকার না করায় প্রথমে বান্ধবীকে তারপরে আমাকে মারধর করেছে। শিক্ষিকাকে জানালে উলটে আমাদেরই বকা দিয়েছে। প্রায়ই আমাকে বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কটুক্তি করা হত।” ছাত্রীর মায়ের দাবি,”মিশনের তরফে আমাদের কিছু বলা হয়নি। মেয়ের কাছ থেকে জেনে আমরা প্রধান শিক্ষিকার কাছে জানতে চাইলে উনি কথা বলেননি। মধ্যমগ্রামের গ্রামীণ হাসপাতালে মেয়েকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম।”
এ বিষয়ে বেসরকারি ওই আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.