Advertisement
Advertisement

Breaking News

দেগঙ্গার পচা মাংসের কারবারের সাপ্লাই লাইন কি উলুবেড়িয়ার গরুর হাট?

দেগঙ্গা ও উলুবেড়িয়া থানার পুলিশকে সতর্ক করেছে নবান্ন৷

Deganga carcass meat case unfolds
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:November 28, 2018 5:54 pm
  • Updated:November 28, 2018 5:56 pm  

সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: মরা পশুর পচা মাংস বিক্রির ঘটনায় এবার জড়িয়ে গেল উলুবেড়িয়ার নাম৷ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দেগঙ্গার পচা মাংসের কারবারের মূল সাপ্লাই লাইন কি উলুবেড়িয়া? ভাবাচ্ছে, তদন্তকারী আধিকারিকদের৷

অভিযোগ উঠেছে, দেগঙ্গায় ভাগাড় কাণ্ডের মূল পাণ্ডা ইকবাল আনসারি গত দু’বছর যাবৎ উলুবেড়িয়া থানার বীরশিবপুর গরুহাট থেকেই মৃত গরুর মাংস কিনে দেগঙ্গা থেকে রাজাবাজার হয়ে কলকাতার বিভিন্ন হোটেলে সরবরাহ করত৷ সেখানে পাঠার মাংস বলে তা চালানো হত বিভিন্ন রেস্তরাঁয়৷ দেগঙ্গায় ছিল এই পচা মাংস ব্যবসার প্রধান ঘাঁটি৷ সেখান থেকেই মৃত পশুর মাংস কেটে রাজাবাজারে মজুত করা হত বলে জানা গিয়েছে৷ গত সোমবার দেগঙ্গার স্থানীয় বাসিন্দারা পচা মাংস বোঝাই একটি ম্যাটাডর ধরে ফেলার পরেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসে৷ তাঁরা সফিয়ার আলি নামে একজনকে ম‍্যাটাডর থেকে পাকড়াও করা গেলেও মূল অভিযুক্ত ইকবাল আনসারির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি৷ মাংস বোঝাই ম্যাটাডরটি থেকে একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ট্রেড লাইসেন্স উদ্ধার হওয়ার পরেই ইকবাল আনসারির সঙ্গে উলুবেড়িয়ার যোগাযোগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে৷

Advertisement

[‘লাল ফেট্টি খুলে গেরুয়া ফেট্টি পরে তাণ্ডব চালাচ্ছে ওঁরা’, জঙ্গলমহলে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী]

দেগঙ্গার সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হল উলুবেড়িয়ার নাম? জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ট্রেড লাইসেন্সটি ২০১৬ সালে উলুবেড়িয়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে নেওয়া৷ বীরশিবপুরের খাঞ্জাদাপুরে হোটেল ব্যবসা চালানোর নামে ইকবাল আনসারি ওই ট্রেড লাইসেন্সটি সংগ্রহ করে৷ এই তথ্য সামনে আসতেই উলুবেড়িয়াই যে ইকবাল আনসারির পচা মাংস ব্যবসার মূল সাপ্লাই লাইন ছিল তা আর বুঝতে অসুবিধা হয়নি তদন্তকারীদের। বর্তমানে উলুবেড়িয়ার বীরশিবপুরে একটি বিশাল গরুর হাট রয়েছে৷ সারা বছর এই হাটে গরু কেনা বেচার কাজ চলে। জায়গার অভাবে এখানে গাদাগাদি করে রাখা হয় কয়েক হাজার গরু। আগে উলুবেড়িয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে শুধুমাত্র শনিবার এই হাট বসলেও গত প্রায় কুড়ি বছর আগে উলুবেড়িয়া থেকে সেই হাট বীরশিবপুরে স্থানান্তর করা হয়৷ কিন্তু, ঘিঞ্জি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে সারা বছর কয়েক হাজার গরুকে বদ্ধ অবস্থায় রাখার জেরে প্রায় প্রতিদিনই নানা কারণে বেশ কয়েকটি গরুর মৃত্যু হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন৷

[অধ্যাপকদের ‘লুঙ্গি ডান্স’ বিতর্ক মেটাতে অবশেষে পদক্ষেপ বিশ্বভারতীর]

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এই সব মৃত গরুগুলির বেশিরভাগই মাছের খাবার হিসাবে কম দামে কিনে নিয়ে যান এক শ্রেণির ক্রেতারা৷ এরকমই একজন ব্যবসায়ী শেখ রেজ্জাক জানান, টিটাগড়ের ইকবাল আনসারি দীর্ঘদিন যাবত উলুবেড়িয়ার এই গরু হাট থেকে কমদামে মৃত গরু কিনে নিয়ে যেত। তার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী৷  তাঁদের কথায়, মৃত গরুগুলিকে ম্যাটাডরে তুলে সেই গাড়িতে ‘ডেড বডি’ বা ‘শববাহী যান’ লিখে দিব্যি পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে চলে যেত ইকবাল অনসারি৷ জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত আনসারির বাবা নিশার আনসারির চামড়ার ব্যবসা ছিল। সেই সূত্রেই ইকবাল মৃত পশুর মাংসের ব্যবসায় হাত পাকাতে শুরু করে। এই ব্যবসা করে সে রাতারাতি মোটা টাকার মালিক হয়ে যায়। দেগঙ্গায় তার ব্যবসার প্রধান ঘাঁটি থাকলেও পচা মাংসের মূল সাপ্লাই লাইনটা ছিল উলুবেড়িয়া। প্রশ্ন উঠেছে, কিভাবে গত দু’বছর একজন মানুষ পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবে মৃত পশুর দেহ কীভাবে বহন করত? বিষয়টি কোনওদিন পুলিশের নজরে আসেনি সেটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে উলুবেড়িয়ার বাসিন্দাদের৷

[দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ৩ সন্তানের মাকে বিয়ে প্রেমিকের]

এবিষয়ে উলুবেড়িয়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুলতানা বেগম শেখ জানিয়েছেন, কেউ হোটেল ব্যবসার জন্য অনুমতি চাইলে তাঁকে অনুমতি দেওয়া যেতেই পারে৷ তবে, সেই ব্যক্তি পচা মাংসের ব্যবসা করছে কিনা সেটা দেখার দায়িত্ব তাঁর উপরে বর্তায় না। এদিকে এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরেই নবান্ন থেকে প্রাণিসম্পদ দপ্তরকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ সেই মতো দেগঙ্গা ও উলুবেড়িয়া থানার পুলিশকে সতর্কও করা হয়েছে৷ চলছে তদন্ত৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement