ছবি: প্রতীকী
শেখর চন্দ্র, আসানসোল: পচেগলে প্রায় কঙ্কাল হয়ে যাওয়া মরদেহ শনাক্ত করা হল আধার কার্ড (Aadhar Card) দিয়ে। আর তাতেই নিখোঁজ হওয়ার দুমাস পরে মৃত ছেলের খোঁজ পেলেন বাবা। সোমবার আসানসোলের কুলটি থানার শাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ির ঝালবাগানে ইসিএল কোয়ার্টারে ঘটেছে এই ঘটনা।
কোয়ার্টারের পেছনে জঙ্গলের ভেতর থেকে গাছে গলায় দড়ি অবস্থায় একবারে পচেগলে গিয়ে প্রায় কঙ্কাল হয়ে যাওয়া মৃতদেহটি উদ্ধার হয়েছিল। ঘটনার জেরে গোটা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল। মৃতদেহের কাছ থেকে একটি আধার কার্ড উদ্ধার হয়। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। জানা যায়, মৃত যুবকের নাম প্রদীপ হাঁসদা। বয়স ২৩।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, প্রদীপ আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ফাঁড়ি বা পিপির অন্তর্গত বরাচক বোরিংডাঙ্গাল এলাকার বাসিন্দা। গত প্রায় দু’মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। ছেলের নিখোঁজের কথা জানিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পিপিতে একটি অভিযোগও করেছিলেন প্রদীপের বাবা সোম হাঁসদা। সোমবারই আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে সেই মৃতদের পুলিশ সোম হাঁসদার হাতে তুলে দেয় পুলিশ।
মঙ্লবার সোম হাঁসদা বলেন, “ছেলে নিজের থেকে এক যুবতীকে বছর কয়েক বিয়ে করেছিল। তাদের এক সন্তানও আছে। মাস কয়েক আগে ছেলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তার স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যায়। তারপর থেকে প্রদীপ চুপচাপ হয়ে যায়। কারও সঙ্গে কথা বলত না। এরমধ্যেই ছেলে দু’মাস আগে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তারপর তার কোন খোঁজ না পেয়ে আমি পুলিশের কাছে একটি মিসিং ডায়েরি করেছিলাম।”
সোমবাবু জানান এরপরও তিনি ছেলেকে খোঁজার প্রচুর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনও কিছু জানতে পারেননি। সোমবার, পুলিশের কাছ থেকে ছেলের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। তাঁর দাবি প্রদীপ আত্মহত্যা করার ছেলে নয়। এর নেপথ্যে অন্য ষড়যন্ত্র রয়েছে। পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করুক।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, কমপক্ষে ২০ দিন আগে প্রদীপ ইসিএল কোয়ার্টারের পেছনে জঙ্গলের মধ্যে গাছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। ওই এলাকায় তেমনভাবে কারও যাতায়াত না থাকায়, কেউ তাঁকে দেখতে পায়নি। যে কারণে মৃতদেহ পচেগলে যায় ও প্রায় কঙ্কালে পরিণত হয়। যদিও ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। মৃত যুবকের পরিবারের তরফে আলাদা করে নতুন করে কোন অভিযোগ দায়ের করা হলে, গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.