বাবুল হক, মালদহ: বহাল তবিয়তে বেঁচে আছেন। কিন্তু তাঁকে মৃত ঘোষণা করে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করেছে পঞ্চায়েত। আর তা দেখিয়েই সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছে দুই ছেলে। এমনই অভিযোগ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের গাজোলে। ভিনরাজ্য থেকে ফিরে সেই বাবাই এখন নিজেকে জীবিত প্রমাণ করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। পুলিশে নালিশ জানিয়ে সুরাহা না হওয়ায় এবার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
মালদহের গাজোলের ঘোষপাড়ায় থাকেন বছর পঞ্চান্নের কার্তিক মণ্ডল। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। কার্তিকবাবু তিন ছেলে, একজন বাইরে থাকেন। কার্তিক মণ্ডলের দাবি, মৃত্যু সমস্ত সম্পত্তি ছেলেকে লিখে দিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মা। সেই সুবাদেই ৯০ শতক জমি ও ৬৩ শতক পাট্টা জমির মালিক তিনি। বোনেদেরও সম্পত্তির ভাগ দিতে চেয়েছিলেন। এতেই আপত্তি তুলেছিল কার্তিকবাবু ছেলেরা। এদিকে আবার কর্মসূত্রে হরিদ্বারে চলে যেতে হয় কার্তিক মণ্ডল। বেশ কয়েক বছর হরিদ্বারেই ছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সুযোগে স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান ও এক সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে বাবার ডেথ সার্টিফিকেট বের করেছে কার্তিকবাবুর দুই ছেলে। সমস্ত সম্পত্তি নিজেদের নামে করে নেয় তারা। শুধু তাই নয়, ৬৩ শতক জমি রেখে বাকি জমি বিক্রিও করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হরিদ্বার থেকে ফিরে যখন গোটা ঘটনা জানতে পারেন, তখন কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে কার্তিক মণ্ডলের। গাজোল থানার অভিযোগও দায়ের করেছিলেন তিনি। কিন্তু পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদে পুলিশ হস্তক্ষেপ করতে চায়নি বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত নিজেকে ‘জীবিত’ প্রমাণ করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কার্তিক মণ্ডল।
[আত্মঘাতী মা, ঠাকুরমার সঙ্গে জেলে গেল ২ বছরের শিশুও!]
কিন্তু, খোঁজখবর না নিয়েই কেন কার্তিক মণ্ডলের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করে দিল পঞ্চায়েত? স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা নন্দনা ঘোষের বক্তব্য, “১২ বছর আগে কার্তিকবাবু হরিদ্বারে কাজে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি বাড়ি ফেরেননি। দুই ছেলে জানিয়েছিল, তিনি মারা গিয়েছেন। তাই ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিল। প্রয়োজনে আদালতে গিয়ে উত্তর দেব।”
অভিযুক্ত দুই ছেলে বিশ্বজিৎ মণ্ডল ও সুশান্ত মণ্ডলের কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.