রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: দূরপাল্লার ট্রেনের কামরায় বিষাক্ত পোকার কামড়। বেঘোরে মারা গেলেন এক যুবক। মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ, ঘটনাটি ট্রেনে কর্তব্যরত টিটিকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। রবিবার রাতে ট্রেন খড়গপুরে পৌঁছানোর পর যখন ওই যুবককে হাসপাতালে ভরতি করা হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। সোমবার ভোরে মারা যান তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসে।
[১০ দফা দাবিতে অবরোধ আদিবাসীদের, রাজ্যজুড়ে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা]
মৃত যুবকের নাম পিন্টু সাউ। বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ছত্রী এলাকায়। ছেলে প্রতীক নার্ভের সমস্যায় ভুগছে। চিকিৎসার জন্য ছেলেকে নিয়ে তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন পিন্টু। সঙ্গে গিয়েছিলেন স্ত্রী প্রণতিও। চিকিৎসা শেষে ১৮ মে তামিলনাড়ু থেকে কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসে ওঠেছিলেন তাঁরা। প্রণতি জানান, ১৯ মে রাতে ট্রেনের কামরায় লোয়ার বার্থে ছেলেকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। আপার বার্থে ছিলেন ৩৮ বছরের ওই যুবক। ঘুমের মধ্যে পায়ে কামড় অনুভব করেন তিনি। এরপরই সারা শরীরের তীব্র জ্বালায় ছটফট করতে থাকেন পিন্টু। শুরু হয় যন্ত্রণাও। কষ্ট আর সহ্য করতে না পেরে স্ত্রীকে ঘটনাটি জানান তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি ট্রেনে কর্তব্যরত টিটির নজরে আনেন পিন্টুর স্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, স্বামী যন্ত্রণায় ছটফট করলেও, বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি টিটি।
রবিবার সকালে কন্যাকুমারী এক্সপ্রেস পৌঁছায় ওড়িশায়। ফের স্বামীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য টিটিকে অনুরোধ করেন প্রণতি। তিনি জানিয়েছেন, একজন চিকিৎসক পিন্টুকে দেখে কিছু ওষধুপত্র দিয়ে যান। জানান, বিষয়টি তেমন গুরুতর কিছু নয়। কিন্তু, ওই যুবকের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। রাত ১১টা নাগাদ ট্রেনটি খড়গপুরে পৌঁছালে, এক আত্মীয়কে ফোন করেন প্রণতিদেবী। রাতেই পিন্টু সাউকে ভরতি করা হয় এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। সোমবার ভোরে হাসপাতালে মারা যান পিন্টু। চিকিৎসকদের অনুমান, রাতে কন্যাকুমারী এক্সপ্রেসের কামরায় যখন তিনি ঘুমিয়েছিলেন, তখন তাঁর পায়ে ট্যারান্টুলা জাতীয় বিষাক্ত কোনও পোকা কামড়েছিল। সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় দ্রুত শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়ে। আর তাতেই মারা গেলেন ওই যুবক।
[কিডনি বিকলের খবরে ঘর ছেড়েছে স্ত্রী, মরণাপন্ন যুবকের পাশে গ্রামের বন্ধুরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.